নিজস্ব প্রতিবেদক:
সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকি নির্মিত আশির দশকের দ্রোহ আর প্রেমের সিনেমা ‘ঘুড্ডি’ দিয়ে চলচ্চিত্র জগতের রোমান্টিক নায়িকা হিসেবে পরিচিতি পান সুবর্ণা মুস্তাফা। ওই চলচ্চিত্রে নাম ভূমিকায় অভিনয় করে দর্শকের হৃদয় কেড়ে নেন। আজও মানুষ মনে রেখেছে সেই শহুরে আধুনিক স্টাইলিস্ট মেয়ে ‘ঘুড্ডি’কে। আজ সুবর্ণা মুস্তফার জন্মদিন। এই গুণী অভিনেত্রীর প্রতি কালচারাল ইয়ার্ড পরিবারের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা। শুভ জন্মদিন ‘ঘুড্ডি’র নায়িকা।
গত চার দশক ধরে শোবিজ অঙ্গনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। টেলিভিশন নাটকে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করে যাচ্ছেন। জড়িয়ে ছিলেন মঞ্চের সঙ্গেও। ঘুড্ডি সিনেমার মাধ্যমে শোবিজ অঙ্গনে নাম করলেও গড়পড়তা চলচ্চিত্রে নিজেকে ভাসিয়ে দেন নি। বেছে বেছে কিছু কালজয়ী সিনেমায় অভিনয় করেছেন। টেলিভিশন নাটকে গড়েছেন নিজের অবস্থান। দু’জন প্রভাবশালী অভিনেতা হুমায়ূন ফরিদী ও আফজাল হোসেনের সঙ্গে জুটি বেঁধে করেছেন অনেক নাটক।
সুবর্ণা মুস্তাফা ১৯৫৯ সালের ২ ডিসেম্বর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। এরপর জড়িয়ে পড়েন মডেলিং ও অভিনয়ে।
আশির দশক থেকে মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ছোটবেলা থেকেই বাবার অনুপ্রেরণায় সংস্কৃতি অঙ্গনের প্রতি ভালো লাগা। সুন্দর চাহনি আর অসাধারণ বাচনভঙ্গি সুবর্ণা মুস্তফাকে নিয়ে গেছে অন্য উচ্চতায়।
১৯৯০ সালে বিটিভিতে প্রচার হওয়া হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে বরকত উল্লাহর পরিচালনায় ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকে অভিনয় করে জনপ্রিয়তার শীর্ষে আসেন। এরপর থেকে নিয়মিতই দেখা যায় হুমায়ূন আহমেদের নাটকে। ১৯৯২ সালে মুক্তি পাওয়া হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত মুস্তাফিজুর রহমানের ‘শঙ্খনীল কারাগার’ সিনেমা দিয়ে সুনাম অর্জন করেন।
সুবর্ণা মুস্তাফার আরও খবর
⇒ চলচ্চিত্রের সংকট নিরসনে সংসদে সুবর্ণার দাবি উপস্থাপন
‘ঘুড্ডি’ সিনেমার পর কিছু মুলধারার বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি। এর মধ্যে ‘নয়নের আলো’ সিনেমায় তার অভিনয় সব শ্রেণির দর্শককে নাড়া দিয়েছিল। ১৯৮৩ সালে ‘নতুন বউ’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ সহ-অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পান।
তাঁর উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন নাটকের মধ্যে রয়েছে: ঘুড্ডি, লাল সবুজের পালা, নতুন বউ, নয়নের আলো, শঙ্খনীল কারাগার, কমান্ডার, পালাবি কোথায়, অপহরণ, আঁখি ও তার বন্ধুরা, গহীন বালুচর, কোথাও কেউ নেই, আজ রবিবার, ফাঁসি, প্রাইভেট ডিটেকটিভ, খণ্ড গল্প ৭১ প্রভৃতি।
ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন প্রয়াত অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদিকে। তবে ২০০৮ সালে ভেঙে যায় তাদের ভালোবাসার সংসার। এরপর বিয়ে করেন নির্মাতা ও চিত্রনাট্যকার বদরুল আনাম সৌদকে। সংসার করছেন সুবর্ণা-সৌদ।
বদরুল আনাম সৌদ’র নির্দেশনায় ‘গহীন বালুচর’ সিনেমায় সর্বশেষ অভিনয় করেন তিনি। এই সিনেমায় নির্বাহী প্রযোজক হিসেবেও ছিলেন তিনি।