আশি ও নব্বই দশকের বাংলা সিনেমার সুপার স্টার চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের ৬২তম জন্মদিন আজ। চলচ্চিত্রজগতের একসময়ের বাদশাহ ও ঢাকাই ছবির সর্বকালের ব্যবসাসফল ছবি ‘বেদের মেয়ে জোছনা’র নায়ক ১৯৫৬ সালের ২৪ শে ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলায় আশুতিয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলা সিনেমার এই রোমান্টিক ও অ্যাকশন হিরো তিন দশক ধরে বাংলা সিনেমায় দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন। পর্দা থেকে আবির্ভূত হয়েছেন বাস্তবজীবনের হিরো হিসেবে। পর্দার নায়ক হিসেবে এখন দেখা না গেলেও তিনি এখন মানুষের বাস্তবজীবনের হিরো। তিন দশক ধরে নিরাপদ সড়ক ও নিরাপদ জীবনের দাবিতে তিনি গড়ে তুলেছেন ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলন। অভিনয়ের সঙ্গে এই আন্দোলনই এখন তাঁর জীবনের একটি প্রাণ। চলচ্চিত্র থেকে মানুষের বাস্তবজীবনের হিরো হয়ে ওঠা চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের জন্মদিনে কালচারাল ইয়ার্ড পরিবারের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
নিজের ৬২তম জন্মদিনের দিনটিও ইলিয়াস কাঞ্চনের কাটছে‘নিরাপদ সড়ক চাই’ এর অফিসে। সেখানেই তাঁর আপন কিছু মানুষ জন্মদিনের কেক কেটে ইলিয়াস কাঞ্চনের জন্মদিন পালন করেন। সন্ধ্যার পরে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কেক কাটেন তিনি। এ ছাড়া সোশ্যাল মিডিয়াসহ ব্যাক্তিগতভাবে তাঁর প্রিয় মানুষ, ভক্ত ও শুভানুধ্যায়ীরা তাঁকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে তাঁর কাছে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠাচ্ছেন অনেকে।
এদিকে জন্মদিন পালন নিয়ে নিজের অনাগ্রহের কথা জানাচ্ছেন ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, ‘আমি আসলে জন্মদিন পালনে বিশ্বাসী নই। এ দিন উদযাপনের কোনো লাভ কিংবা পালন না করলে ক্ষতির কিছু দেখি না। বেঁচেই তো আছি। সবসময় যেন সুস্থ থাকি এটাই কামনা করি। সব সময় সবার কাছে এই দোয়াই চাই’।
ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি দূর্বল ছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেছেন তিনি। তখন থেকেই যুক্ত ছিলেন নাট্য সংগঠনের সাথে। ১৯৭৭ সালে কিংবদন্তি নির্মাতা সুভাষ দত্তের ‘বসুন্ধরা’ ছবি দিয়ে চলচ্চিত্রে আবির্ভাব। সেই ছবিতে তাঁর বিপরীতে নায়িকা ছিলেন ববিতা। সময়ের সাথে সাথে তিনি নিজেই হয়ে উঠেছেন চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি। ৩৫০টিরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। তাঁর অভিনীত বেশিরভাগ ছবিই হয়েছিলো ব্লকবাস্টার হিট।
১৯৮৯ সালে মুক্তি পাওয়া তার অভিনীত ‘বেদের মেয়ে জোছনা’র ব্যবসায়িক সাফল্য এখনো ঢাকাই ছবিতে রূপকথা হয়ে আছে। তোজাম্মেল হক বকুলের পরিচালনায় ছবিটিতে অঞ্জু ঘোষের সাথে জুটি বেঁধেছিলেন তিনি। তাঁর উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে: দয়া মায়া, ডুমুরের ফুল, সুন্দরী, শেষ উত্তর, মোহনা, তিন কন্যা, বেদের মেয়ে জোসনা, রাজকুমার আনোয়ার, শঙ্খ মালা, নিঝুম অরণ্যেসহ অসংখ্য সিনেমা।
১৯৮৬ সালে ‘পরিণীতা’ চলচ্চিত্র ও ২০০৫ সালে ‘শাস্তি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। সমাজসেবা কার্যক্রমের জন্য ২০১৮ সালে তিনি একুশে পদকে ভূষিত হন।