লেখক, গবেষক, সাংবাদিক ও শিক্ষক অনুপম হায়াৎ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতা ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স করেছেন। চলচ্চিত্র বিষয়েও ডিগ্রি নিয়েছেন। ছিলেন টিসিবির সাবেক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা। চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সদস্য ও চলচ্চিত্রের জুরি বোর্ডের সদস্যও হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে চলচ্চিত্র বিষয়ে শিক্ষকতা করেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, গ্রীন বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ, ঢাকা ফিল্ম ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে। তিনি বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের ফেলো। তাঁর লেখা ‘ঈদ উৎসবের ইতিহাস ও ঐতিহ্য’ গ্রন্থে প্রকাশিত ‘ঈদের প্রথম চলচ্চিত্র’ শিরোনামের এই লেখাটি ‘কালচারাল ইয়ার্ড’ এর পাঠকদের জন্য হুবাহু দেয়া হলো।
চলচ্চিত্র আবিস্কার হওয়ার পর ঈদ নিয়ে কোনো চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে কী না ইতিহাসে এর সন্ধান পাওয়া যায় না। তবে ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতার প্রখ্যাত চলচ্চিত্র স্টুডিও ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘নিউ থিয়েটার্স’ একটি বৈপ্লবিক কর্ম সম্পাদন করে। এ বছর এই প্রতিষ্ঠান থেকে ‘ঈদের গান’ (ঈদ’স সং) নামে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যর তথ্যচিত্র নির্মাণ করে। সম্ভবত: এই চিত্রটি নির্মিত হয় কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ও সুরারোপিত এবং আব্বাস উদ্দিনের কণ্ঠে গীত ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ নিয়ে। গ্রামোফোন রেকর্ডে ১৯৩২ সালের জানুয়ারিতে প্রকাশের পর। গানটির রেকর্ড নম্বর ছিল এন ৪১১১। তবে ঈদের গান চলচ্চিত্রটি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানা যায় না শুধুমাত্র উল্লেখ ছাড়া। এই চলচ্চিত্রটির পরিচালক, শিল্পী ও কলাকুশলী সম্পর্কে কিছুই জানা জানা যায় নি। মুসলিম ধর্ম ও সমাজ নির্ভর এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ চিত্রের প্রিন্টও সম্ভবত: হারিয়ে গেছে।
পরবর্তীকালে ১৯৪৭ উত্তর পরিবেশে ঢাকায় এফডিসি স্থাপনের পর জহির রায়হান তাঁর কাঁচের দেয়াল (১৯৬৩) চলচ্চিত্রে পরিবারিক পরিবেশে ঈদ পালনের দৃশ্য সংযোজন করেছেন। অন্যদিকে শেখ নজরুল ইসলাম ‘ঈদ মোবারক’ (১৯৮২) নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন।
এটা খুবই দু:খজনক যে, উপমহাদেশের মুসলমানদের দু’টি প্রধান উৎসব হলো ঈদ। অথচ চলচ্চিত্রে সেই ঈদ উৎসবের প্রতিফলন নেই।