নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের ৪৪তম আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। অনুষ্ঠানে অনলাইনের মাধ্যমে গণভবন থেকে যুক্ত হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে এবারের পুরস্কার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়েছেন অনুষ্ঠানের সভাপতি তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
রবিবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান এবং তথ্যসচিব খাজা মিয়াসহ দেশের চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতি অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। এ অনুষ্ঠানে চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদানের জন্য আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার ও অভিনেতা মাসুদ পারভেজ (সোহেল রানা) ও চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী কোহিনুর আক্তার সুচন্দা।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান শেষে ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এ সময় বলেন, চলচ্চিত্র শিল্প দেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখে। তাই সুস্থ চলচ্চিত্র নির্মাণে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে।
এ সময় এ সরকার চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নে কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, এফডিসিকে আধুনিক স্থাপনায় রুপ দিতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। চলচ্চিত্র আর্কাইভ এবং চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। যাতে করে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা চলচ্চিত্র শিল্পে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারে। ভালো চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে চলচ্চিত্রে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।
তিনি বলেন, সিনেমাগুলো সেভাবেই তৈরি করতে হবে যেন পরিবার নিয়ে দেখা যায়। শিশুদের জন্যও সিনেমা তৈরি করতে হবে। যেন তারা সিনেমা দেখে শিক্ষা নিয়ে জীবনকে প্রস্তুত করতে পারে।
এ সময় তিনি নিজে উপস্থিত থেকে পুরস্কার দিতে না পারায় দু:খ প্রকাশ করে বলেন, আমি চেয়েছিলাম নিজে উপস্থিত থেকে পুরস্কার দিতে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে একরকম বন্দি জীবনযাপন করছি। তবে ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে যোগদান করতে ডিজিটাল বাংলাদেশের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন তিনি। এ সময় তিনি আশা প্রকাশ করেন অতি দ্রুত করোনার হাত থেকে দেশ মুক্তি পাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরপরই চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ নেন। তিনি এফডিসি প্রতিষ্ঠা করেন ও এর উন্নয়নে কাজ করেন।
এ সময় তিনি বলেন, জাতির পিতার অধরা কাজগুলো সম্পন্ন করাই এখন আমাদের দায়িত্ব।
যারা পেলেন পুরস্কার:
এবারে ২০১৯ সালে নির্মিত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্য থেকে ২৫টি ক্যাটাগরিতে ৬টি যুগ্মসহ ৩১টি পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন মাসুদ পারভেজ (সোহেল রানা) ও কোহিনূর আক্তার সুচন্দা। চলচ্চিত্র: ন ডরাই ও ফাগুন হাওয়ায়। স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র : নারী জীবন, প্রামাণ্য চলচ্চিত্র : যা ছিলো অন্ধকারে। চলচ্চিত্র পরিচালক : তানিম রহমান অংশু (ন ডরাই)।
অভিনেতা : তারিক আনাম খান (আবার বসন্ত), অভিনেত্রী : সুনেরাহ বিনতে কামাল (ন ডরাই), পার্শ্ব অভিনেতা : ফজলুর রহমান বাবু (ফাগুন হওয়ায়), পার্শ্ব অভিনেত্রী : নারগিস আক্তার (মায়া- দ্য লস্ট মাদার), খল অভিনেতা : জাহিদ হাসান (সাপলুডু), শিশু শিল্পী : নাইমুর রহমান আপন (কালো মেঘের ভেলা) ও আফরীন আক্তার (যদি একদিন)।
সঙ্গীত পরিচালক : মোস্তাফিজুর রহমান ইমন (মায়া- দ্য লস্ট মাদার), নৃত্য পরিচালক : হাবিবুর রহমান (মনের মতো মানুষ পাইলাম না), গায়ক : মৃণাল কান্তি দাস (তুমি চাইয়া দেখো- শাটল ট্রেন), গায়িকা : মমতাজ বেগম (বাড়ির ওই পূর্বধারে- মায়া- দ্য লস্ট মাদার) ও ফাতিমা-তুয যাহুরা ঐশী (মায়া, মায়ারে- মায়া- দ্য লস্ট মাদার)।
গীতিকার : নির্মলেন্দু গুণ (ইস্টিশনে জন্ম আমার- কালো মেঘের ভেলা) ও কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী (চল হে বন্ধু- মায়া- দ্য লস্ট মাদার)। সুরকার : প্লাবন কোরেশী (বাড়ির ওই পূর্বধারে- মায়া দ্য লস্ট মাদার) ও তানভীর তারেক (আমার মায়ের আঁচল- মায়া দ্য লস্ট মাদার)।
কাহিনীকার : মাসুদ পথিক (মায়া-দ্য লস্ট মাদার), চিত্রনাট্যকার : মাহবুব উর রহমান (ন ডরাই), সংলাপ রচয়িতা : জাকির হোসেন রাজু (মনের মতো মানুষ পাইলাম না), সম্পাদক : জুনায়েদ আহমেদ হালিম (মায়া- দ্য লস্ট মাদার), শিল্প নির্দেশক : মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বসু ও ফরিদ আহমেদ (মনের মতো মানুষ পাইলাম না), চিত্রগ্রাহক : সুমন কুমার সরকার (ন ডরাই)।
শব্দগ্রাহক : রিপন নাথ (ন ডরাই), পোষাক ও সাজ-সজ্জা : খন্দকার সাজিয়া আফরিন (ফাগুন হাওয়ায়)।