কালচারাল ইয়ার্ড ডেস্ক:
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় জন্ম নেওয়া সৈয়দ মোহাম্মদ আসলাম তালুকদার সিনেমায় অভিনয়ের স্বপ্ন নিয়ে আসেন এফডিসিতে। এফডিসি আয়োজিত ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ কার্যক্রমে অংশ নিয়ে সুযোগ পান অভিনয়ের। সেই যে শুরু এরপর মৃত্যু অবধি সিনেমার সঙ্গেই থেকে গেলেন। সিনেমার জুনিয়র নায়ক থেকে একক নায়ক, একসময় হলেন ঢালিউড সুপারস্টার চিত্রনায়ক। আজ তাঁর জন্মদিন। জন্মদিনে স্মরণীয় ঢালিউড সুপারস্টার মান্না।
১৯৬৪ সালের ১৪ এপ্রিল টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গায় জন্মগ্রহণ করেন নায়ক মান্না। ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৪৪ বছর বয়সে মারা যান এই চিত্রনায়ক। মৃত্যুর এতদিন পরও ভক্তরা তাঁকে মনে রেখেছে। পরিবার ও চলচ্চিত্র শিল্পী-কুশলীদের পাশাপাশি তাঁকে স্মরণ করে এদিনে ভক্তরা দোয়ার আয়োজন করে। কালচারাল ইয়ার্ড পরিবার এই গুনী চলচ্চিত্র অভিনেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছে।
জনপ্রিয় চিত্রনায়ক মান্নার অভিনয় শুরু মঞ্চের মাধ্যমে। মঞ্চে অভিনয়ের সুবাদেই তিনি মান্না নামে খ্যাত ছিলেন। এই নামটিই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নামে পরিণত হয়েছে। তিনি তিনশ’র অধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন। নব্বই দশক ও একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকে মান্নার সিনেমা মানেই হিট। অসংখ্য সুপারহিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন মান্না। তিনি অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজনাও করেছেন। কৃতাঞ্জলি চলচ্চিত্র তাঁর প্রযোজনা সংস্থা। এখন তাঁর স্ত্রী শেলী মান্না সংস্থাটির দায়িত্বে আছেন।
কৃতাঞ্জলি চলচ্চিত্র প্রযোজিত সিনেমাগুলোর মধ্যে আছে- স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ, লুটতরাজ, আমি জেল থেকে বলছি, পিতা মাতার আমানত, দুই বধু এক স্বামীসহ মোট আটটি সিনেমা।
১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা (এফডিসি) আয়োজিত ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ কার্যক্রমের মাধ্যমে শোবিজ অঙ্গনে আসেন মান্না। প্রথম অভিনয় করেন ‘তওবা’ সিনেমায়। তবে ১৯৯১ সালে মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত কাসেম মালার প্রেম চলচ্চিত্রে একক নায়ক হিসেবে আবির্ভাব ঘটে তাঁর। ছবিটি ব্যবসায়িক সফলও হয়।
নব্বই দশক থেকে মৃত্যু অবধি তিনি দুই দশক দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন। তিনি রোমান্টিক হিরোকে ছাপিয়ে অ্যাকশন হিরো হিসেবে পরিচিতি পান। তাঁর অভিনীত সর্বশেষ ছবি রকিবুল আলম রকিবের ‘নষ্ট জীবন’।
এছাড়া মান্না অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে-দাঙ্গা, প্রেম দিওয়ানা, ডিস্কো ড্যান্সার, খল নায়ক, বসিরা, শান্ত কেনো মাস্তান, কুখ্যাত খুনী, গুণ্ডা নাম্বার ওয়ান, রংবাজ, বাদশা, টপ সম্রাট, সুলতান, ভাইয়া, বিদ্রোহী সালাহউদ্দিন, বাবা, মিনিস্টার, তেজী, ত্রাস, চাঁদাবাজ, ঢাকাইয়া মাস্তান, মান্না ভাই, সন্ত্রাসী মুন্না, জিদ্দি ড্রাইভার, রাজা, লাল বাদশা, রুস্তম, বাংলার হিরো, আমি জেল থেকে বলছি, আম্মাজান, বীর সৈনিক ইত্যাদি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
কাজী হায়াৎ পরিচালিত তাঁর আম্মাজান সিনেমাটি বাংলাদেশের ব্যবসাসফল ও জনপ্রিয় চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম। ২০০৩ সালে তিনি বীর সৈনিক সিনেমায় সেরা অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
চিত্রনায়ক মান্না আটবার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন লাভ করেন এবং তিনবার এই পুরস্কার অর্জন করেন। বেশ কয়েকবার বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন তিনি।