কালচারাল ইয়ার্ড ডেস্ক:
বাংলাদেশ তথা উপমহাদেশের কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী রুনা লায়লা। তিনি বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হয়ে আছেন তার গজল, পপ, আধুনিক সঙ্গীত ও চলচ্চিত্রের গান দিয়ে। রুনা লায়লা বিশ্বের ১৮টি ভাষায় দশ হাজারেরও অধিক গান গেয়েছেন। তিনি কালজয়ী কিছু গানের সুরও করেছেন। আজ ১৭ নভেম্বর এই কিংবদন্তি শিল্পীর ৭০তম জন্মদিন। কালচারাল ইয়ার্ডের পরিবারের পক্ষ থেকে জন্মদিনের শ্রদ্ধা।
সুরকার নিসার বাজমির ১০টি করে তিন দিনে মোট ৩০টি গান রেকর্ড করে রুনা লায়লার নাম উঠে আসে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে। তিনি বাংলা-হিন্দি-উর্দু ছাড়াও বিশ্বের প্রায় ১৮টি ভাষায় গান গেয়েছেন। এ সব ভাষার মধ্যে আছে গুজরাটি, পাঞ্জাবি, সিন্ধি, পশতু, বেলুচ, আরবি, পারসিয়ান, মালয়, নেপালি, জাপানি, ইতালিয়, স্প্যানিশ, ফরাসি ও ইংরেজিসহ আরও অনেক।
১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর সিলেট জেলায় জন্ম রুনা লায়লার। তাঁর বাবার নাম সৈয়দ মোহাম্মদ ইমদাদ আলী ও মা আমিনা লায়লা। তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানে কেটেছে রুনা লায়লার শৈশব এবং কৈশোরের কিছু সময়। মাত্র ৬ বছর বয়সে তিনি প্রথম মঞ্চে গান পরিবেশন করেন। ১৯৬৪ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম গান । অল্প বয়স থেকেই স্টেজে সংগীত পরিবেশন করেন। তিনি করাচি রেডিওতে গান গেয়েও ছেলেবেলায় পরিচিতি পান।
১৯৬৭ সালে পাকিস্তানি চলচ্চিত্রে ‘দাইয়ারে দাইয়ারে দাইয়া’ গান গেয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন এই কিংবদন্তি। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর নিজের সিদ্ধান্তে তিনি পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে চলে আসেন। ১৯৭৪ সালে প্রয়াত সত্য সাহার সুরে ‘জীবন সাথী’ চলচ্চিত্রে গান গেয়ে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে তার পদচারণা। এরপর একের পর এক বাংলা চলচ্চিত্রে তিনি কণ্ঠ দিয়েছেন।
কল্যাণজি-আনন্দজির সুরে হিন্দি ছবি ‘এক সে বারকার এক’-এর টাইটেল গানে প্লেব্যাক করেন রুনা লায়লা। তাঁর গাওয়া হিন্দি গান ‘দমাদম মাস্ত কালান্দার’ এখনও কালজয়ী হয়ে আছে। তখন থেকেই তিনি ভারতে ‘দামদাম গার্ল’ হিসেবে পরিচিতি পান। এছাড়া রুনা লায়লার গাওয়া হিন্দি গানের মধ্যে রয়েছে ‘দে দে পেয়ার দে’, ‘আও সুনলো’, ‘মেরা বাবু ছেল ছাবিলা’সহ বহু গান।
১৯৭৪ সালে ‘সাধের লাউ’ গানের মাধ্যমে কলকাতায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন রুনা। গানের পাশাপাশি একটি চলচ্চিত্রেও নায়িকা হিসেবেও অভিনয় করেছিলেন রুনা লায়লা। চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘শিল্পী’ সিনেমায় তার বিপরীতে অভিনয় করেন জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ও তাঁর বর্তমান স্বামী আলমগীর।
গানের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছিলেন রুনা লায়লা। তিনি সেরা সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে ৭ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি অর্জন করেছেন স্বাধীনতা পুরস্কার। এছাড়া ভারতে সায়গল পুরস্কার, সঙ্গীত মহাসম্মান পুরস্কার, তুমি অনন্যা সম্মাননা ও দাদা সাহেব ফালকে সম্মাননা পেয়েছেন কিংবদন্তি শিল্পী রুনা লায়লা।
এছাড়া তিনি পাকিস্তানে ২বার নিগার পুরস্কার, ২বার গ্র্যাজুয়েট পুরস্কার, ক্রিটিক্স পুরস্কার ও জাতীয় সঙ্গীত পরিষদ স্বর্ণপদকে ভুষিত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: শাহনেওয়াজের কথায় অনিরুদ্ধ শুভর নতুন গান