মুক্তিযুদ্ধের পরপরই ৭২ সালের জানুয়ারি মাসে ঢাকার হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেন প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা শবনম ফেরদৌসি। তাঁর সঙ্গে ওই একই দিনে একই হাসপাতালে জন্মায় আরও ১২জন শিশু। এদের বলা হয় যুদ্ধশিশু। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর লোলুপতার শিকার হয়ে যে সব নারীর গর্ভে জন্ম তাদের। এ সব শিশুদের অনেককেই তাদের পরিবার ফিরিয়ে নেয়নি। উপায় না দেখে অনেককেই দত্তক দিয়ে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেয়া হয়। অনেকে নিজভূমেই বড় হয় অবজ্ঞা অবহেলায়। জন্মের ৪৫ বছর পর চেতনার তাড়নায় উদ্ভাসিত শবনম ফেরুদৌসি তার সেই ‘জন্মসাথীদের খোঁজা শুরু করেন। ক্যামেরা-ক্রু নিয়ে চষে বেড়ান বাংলার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত। তুলে আনেন তাঁর জন্মসাথীদের কথা। এ নিয়ে নির্মাণ করেন প্রামাণ্যচিত্র ‘জন্মসাথী’।
দেশে-বিদেশের বিভিন্ন উৎসব ঘুরে জন্মসাথী যাচ্ছে ১৫তম মুম্বাই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে। আগামী ২৮ জানুয়ারি থেকে ভারতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এই উৎসব। মুম্বাইয়ে অনুষ্ঠিতব্য এই উৎসবের ইন্টারন্যাশনাল কম্পিটিশন বিভাগে স্থান পেয়েছে শবনম ফেরদৌসীর প্রামাণ্যচিত্র ‘জন্মসাথী’। দক্ষিণ এশিয়ার প্রামাণ্যচিত্র, স্বল্পদৈর্ঘ্য এবং অ্যানিমেশন চলচ্চিত্রের প্রাচীন ও সর্ববৃহৎ এই উৎসবের ফিল্ম ডিভিশনে এটি প্রদর্শিত হবে ২ ফেব্রুয়ারি।
এ বিষয়ে নির্মাতা শবনম ফেরদৌসী বলেন, এ পর্যন্ত আমি নিজ থেকে কোনও উৎসবে প্রামাণ্যচিত্রটি পাঠাইনি। যারা চেয়েছেন শুধুমাত্র তাদেরই দিয়েছি। ‘জন্মসাথী’কে আমি বাংলাদেশে দেখানোর বিষয়েই প্রাধান্য দিয়েছি। কারণ এ ইতিহাসটা আমি আগে বাংলাদেশের মানুষদের জানাতে চাই।
‘জন্মসাথী’ ছাড়াও এবারের মুম্বাই উৎসবে স্বল্পদৈর্ঘ্য বিভাগে মনোনীত হয়েছে বাংলাদেশের আরেকটি চলচ্চিত্র, খন্দকার সুমনের ‘পৌনঃপুনকি’।