বিশেষ প্রতিবেদক:
ঢাকাই চলচ্চিত্রের উদিয়মান তারকা জয় চৌধুরী। ২০১৩ সালে এফআই মানিকের ‘এক জবান’ সিনেমা দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু হলেও ২০১৭ সালে ‘অন্তর জ্বালা’ সিনেমা দিয়ে আলোচনায় আসেন। ইতোমধ্যেই তার অভিনীত ৭টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। মুক্তির অপেক্ষায় আরো ৩টি সিনেমা। বর্তমানে তিনি যৌথ প্রযোজনাসহ বেশ কিছু চলচ্চিত্রে কাজ করছেন। কালচারাল ইয়ার্ডের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় নিজের অভিনয় জীবনের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন এই তারকা।
কালচারাল ইয়ার্ড: কেমন আছেন?
জয় চৌধুরী: ভালো আছি।
কালচারাল ইয়ার্ড: চলচ্চিত্রে শুরুটা কিভাবে?
জয় চৌধুরী: ছোটবেলা থেকে প্রচুর ছবি দেখলেও কখন ভাবিনি যে, আমি অভিনেতা বা নায়ক হবো। পড়াশুনা শেষ করার পরে আমার আত্নীয় অভিনেতা ও প্রযোজক মনোয়ার হোসেন ডিপজল আমাকে কিছুটা জোর করে চলচ্চিত্রে নিয়ে আসেন। প্রথমে তিনি আমাকে বিভিন্ন প্রশিক্ষকের মাধ্যমে এক বছর গ্রুমিং করে অভিনয়, নাচ, ফাইটসহ চলচ্চিত্রের জন্য যা প্রয়োজন, সেগুলো শেখান। এরপর এফ আই মানিকের ‘এক জবান’ চলচ্চিত্র দিয়ে আমার অভিনয়ের ক্যারিয়ার শুরু হয়।
কালচারাল ইয়ার্ড: আমরা শুনেছি, ‘এক জবান’ সিনেমার পরে আপনার একটা বিরতি ছিলো। সেই বিরতি শেষে ফেরার গল্পটা বলুন।
জয় চৌধুরী: হ্যাঁ, ‘এক জবান’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পরে আমি দেশের বাইরে চলে যাই। প্রায় দেড় বছর পরে আবার দেশে ফিরি। তখন ভেবেছিলাম আমাকে হয়তো আর কেউ মনে রাখে নাই। চলচ্চিত্রে হয়তো আমার আর কাজ করা হবে না। কিন্তু হঠাৎ করে খোকন রেজভী পরিচালিত ‘ভালোবাসলে দোষ কি তাতে’ ছবির অফার পাই। এই ছবিতে কাজ করতে করতে আরো বেশ কিছু ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হই।
কালচারাল ইয়ার্ড: আপনার অভিনীত চলচ্চিত্র নিয়ে বলুন।
জয় চৌধুরী: ‘এক জবান’ ও ‘ভালোবাসলে দোষ কি তাতে’ ছাড়া এ পর্যন্ত আমার অভিনীত আরো ৫টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। সেগুলো হচ্ছে- ওয়াজেদ আলী সুমনের ‘আজব প্রেম’ ও ‘হিটম্যান’, নজরুল ইসলাম বাবুর ‘চিনি বিবি’, আবুল কাসেম মন্ডলের ‘ক্ষণিকের ভালোবাসা’ এবং মালেক আফসারীর ‘অন্তর জ্বালা’।
কালচারাল ইয়ার্ড: সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া ‘অন্তর জ্বালা’ সিনেমায় আপনার একটা নৃত্য নিয়ে কিছু সমালোচনা হয়েছে। বিষয়টিকে কিভাবে দেখছেন?
জয় চৌধুরী: আমরা যখন ওই গানটির শ্যুটিং করি, তখন আসলে আমাদের কাছে সেরকম কিছু মনে হয় নাই। রিলিজের পরে দেখে বুঝলাম, যে গানটা একটু ফার্স্ট বিটের হয়ে গেছে। তবে ওই গানটি সিচুয়েশনাল ডিমান্ড ছিলো। ফলে যারা পুরো সিনেমাটা দেখেছেন, তারা সমালোচনা করেন নাই। যারা শুধু অনলাইনে গানটা দেখেছেন তারাই সমালোচনা করেছেন। কারণ তারা গানের আগের দৃশ্য বা পরের দৃশ্য সম্পর্কে জানেন না। আবার সমালোচকরা হয়তো জায়েদ খান বা আমাকে পছন্দ করেন না এমনটাও হতে পারে। তবুও সমালোচনাগুলোকে আমি সব সময় ভালোভাবে নেই। কারণ তাদের এই সমালোচনাগুলো আমার কাজকে আরো ভালো করতে সহযোগিতা করে।
চিত্রনায়ক জয় চৌধুরীর আরও নিউজ :
⇒ মিশা-জায়েদ প্যানেলে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে জয় চৌধুরী
⇒ সাইমন-মাহির ‘আনন্দ অশ্রু’তে জয় চৌধুরী
কালচারাল ইয়ার্ড: এখন কোন কোন চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন ?
জয় চৌধুরী: এ. কিউ. খোকনের ‘ভালোবাসি কতো বোঝাবো কেমনে’ চলচ্চিত্রটি আগামী মাসে মুক্তি পাবে। কাজল কুমার বর্ধনের ‘অবাস্তব ভালবাসা’ এবং ফারুক হোসেনের ‘কাকতারুয়া’ সিনেমার কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে । এছাড়া মালেক আফসারীর ‘হ্যালো’, যৌথ প্রযোজনায় বি. কে. আজাদের ‘দোস্ত দুশমন’ এবং রিতুব্রত ভট্টাচার্যের ‘জিরো পয়েন্ট’ চলচ্চিত্রের কাজ খুব শিঘ্রই শুরু হবে।
কালচারাল ইয়ার্ড: দেশে যৌথ প্রযোজনা নিয়ে নানা আলোচনা সমালোচনা আছে। এ নিয়ে আপনার মন্তব্য কি?
জয় চৌধুরী: দুই বা তার বেশি দেশের শিল্পী কলাকুশলীদের নিয়ে নিয়ম মেনে যে চলচ্চিত্র তৈরি করা হয়, সেটা যৌথ প্রযোজনা। আসলেই এটি একটি সুন্দর পদ্ধতি। অনেক আগে থেকে এটা হয়ে আসছে। এটা নিয়ে কখনই কারো কোন অভিযোগ ছিলো না বা এখনও নেই। কিন্তু যে চলচ্চিত্র নির্মাণে যৌথ প্রযোজনার নিয়ম মানা হয় না, সেটা তো যৌথ প্রযোজনাই হয় না। সেটা হয় যৌথ প্রতারণা। আমি সব সময়ই যৌথ প্রযোজনার নয়, যৌথ প্রতারণার বিরোধী।
কালচারাল ইয়ার্ড: চলচ্চিত্র নিয়ে আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি?
জয় চৌধুরী: আমার মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাগুলোর পরে দর্শক এবং চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে যে ভালোবাসা পেয়েছি, কাজের মাধ্যমে দর্শকদের সে ভালোবাসার মূল্য দিতে চাই। সেটা কোনভাবেই নষ্ট করতে চাই না। তাই ভবিষ্যতে আমি নিজের চরিত্র ও গল্প বাছাইয়ের ক্ষেত্রে খুব সতর্কতা অবলম্বন করবো।
কালচারাল ইয়ার্ড: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
জয় চৌধুরী: কালচারাল ইয়ার্ড এবং আপনাকেও ধন্যবাদ।