অভিনয় একটি রোমাঞ্চকর পেশা। শিল্প ও সংস্কৃতির প্রতি অনুরাগ থেকে এ পেশায় আবহমানকাল থেকে যুক্ত হয়েছে অনেকে। এ পেশার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে খুব দ্রুত পৌঁছানো যায়। অনেক মানুষের ভালোবাসাও অর্জণ করা যায়। কিন্তু তথ্য প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় এ পেশা যেন আজ বোকাবাক্সে বন্দি তারকাখ্যাতিতে। শুধু এ লোভেই অনেকে অভিনয়ে আসছেন। কিন্তু শিল্পবোধ কতটুকু জাগ্রত হয়েছে তার হিসেব খুবই নগণ্য। দিনে দিনে যেন তারকা খ্যাতির পাবার নেশায় বাড়ছে অভিনেতা-অভিনেত্রীর সংখ্যা। কিন্তু তৈরী হচ্ছে কি বোধসম্পন্ন অভিনয় শিল্পী।বর্তমান সময়ে এ সংকট যেন অনুভব হচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে।
অনেকেই থিয়েটারে ভর্তি হয় কিন্তু যার স্থায়িত্ব নেই বললেই চলে। দু একটা মঞ্চ নাটকে অভিনয় করে নিজেকে অভিনেতা ভাবা শুরু করে দেয়। প্রকৃত অর্থে তারা অভিনয়ের জ্ঞান কতটুকু অর্জন করতে পেরেছে? অভিনয় এতটা সহজ নয় যে তিন বা ছয় মাসের একটা কোর্স করলে অভিনয়ের জ্ঞান অর্জন হয়ে যায়। অভিনয় শেখা অনেকটা ধৈর্য পরিশ্রম আর সাধনার প্রয়োজন হয়।
একটু খেয়াল করলেই দেখা যায়, প্রায় বেশিরভাগ থিয়েটার গুলো মঞ্চ দলের কর্মী আহবান সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি দিয়ে থাকে। এর কারণের মঞ্চ নাটকের ভিত্তি প্রতিনিয়ত দুর্বল হয়ে পড়ছে। পাওয়া যাচ্ছে না দক্ষ নাট্যকর্মী বা দক্ষ অভিনয় শিল্পী।
প্রতি বছর নতুন নতুন সদস্য যোগ হওয়ায় থিয়েটার প্রধান, নির্দেশক, প্রযোজক, মঞ্চে নাটক উপস্থাপনে হিমশিম খাচ্ছে। খুব কষ্টে দু একটা মঞ্চ নাটক মঞ্চে উপস্থাপন করতে পারলেও বিভিন্ন দিক থেকে কোন একটা বিষয় নাটককে দুর্বল করে দেয়। এই দুর্বলতাও বর্তমানের নাটকের জনপ্রিয়তা হারানোর প্রধান কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। তৈরি হয়েছে আধুনিক মঞ্চ, স্টুডিও, থিয়েটার। নাট্যকর্মীরা পাচ্ছে আধুনিক সুযোগ সুবিধা। কিন্তু তাতেও এ সংকট থেকে উত্তোরণ সেভাবে হচ্ছেনা। তৈরী হচ্ছেনা সেলিম আল দীন, সৈয়দ শামসুল হক, আবদুল্লাহ আল মামুন, মামুনুর রশীদ, মান্নান হীরার মত নাট্যকার।
এরপরও কিছু কিছু নাট্যদল এখনও স্বগৌরবে টিকে আছে। এ ডিজিটাল প্রযুক্তির যুগেও জনপ্রিয়তা পাচ্ছে এ দলের নাটকগুলো। তবে এখানে আসা অভিনয় কর্মীদের এ শিল্পের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ও ভালোবাসা এ শিল্পকে অনেক উপরে আসীণ করবে এ প্রত্যাশা।