নিজস্ব প্রতিবেদক :
‘আপনা মাঝে শক্তি ধরো, নিজেকে করো জয়’ শীর্ষক প্রতিপাদ্যে ওয়াহিদুল হক স্মারণিক মিলনোৎসব ২০১৮শুরু হলো। কণ্ঠশীলনের আয়োজনে কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারে শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তনে দু’দিনব্যাপী আয়োজনের উদ্বোধন করেন সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব কামাল লোহানী। শুক্রবার সকালে কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরি প্রাঙ্গণে জাতীয় সংগীত ও গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় উৎসব। এরপরেই জাতীয় পতাকা তুলে ও বেলুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন তিনি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মঞ্চসারথি আতাউর রহমান ও শব্দসৈনিক আশরাফুল আলম। পরে তামান্না রহমান ও তার দলের মনোমুগ্ধকর নৃত্যের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মিলনায়তনের আয়োজন। অনুষ্ঠানে নেপাল দুর্ঘটনায় নিহতদের শ্রদ্ধা জানিয়ে নিরবতা পালন করা হয়।
উৎসবের আহ্বায়ক ও কণ্ঠশীলন সভাপতি গোলাম সারোয়ারের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন কণ্ঠশীলন অধ্যক্ষ মীর বরকত। তিনি বলেন, প্রতি দুই বছর পরপর ওয়াহিদুল হক স্মরণে এই আয়োজন করছি ষষ্ঠবারের মতো। বিগত পাঁচটি উৎসবের মতো এবার কণ্ঠশীলন প্রথম থেকে নবতিতম আবর্তন উত্তীর্ণ সকল শিক্ষার্থীদেও অংশগ্রহণসহ আয়োজিত সাংস্কৃতিক পর্বে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের পাশাপাশি দেশের বরেণ্য আবৃত্তিশিল্পীরা আবৃত্তি করবেন।
ওয়াহিদুল হকের বর্ণময় জীবন ও আপোষহীন চরিত্রের কথা উল্লেখ করে কামাল লোহানী বলেন, দেশের সংস্কৃতিচর্চার পথ নির্মাণে অগ্রপথিক ছিলেন ওয়াহিদুল হক। সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত থাকলেও তাঁর সবচেয়ে বড় অবদান সংস্কৃতির ক্ষেত্র প্রস্তুত করা। বাঙালিত্বেও গর্ব নিয়ে মাথা উঁচু কওে বেঁচে থাকার জন্য আজীবন মানুষ গড়েছেন, সংঘবদ্ধ করেছেন, পথ দেখিয়েছেন ওয়াহিদুল হক। তাঁর দীক্ষা নিয়েই বাঙালি সংস্কৃতির প্রচার ও প্রসারে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে কণ্ঠশীলন।
উদ্বোধনী আলোচনা শেষে কণ্ঠশীলনসহ দেশের প্রতিশ্রুতিশীল বিভিন্ন সংগঠনের সংস্কৃতিকর্মীদের অংশগ্রহণে বের করা হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। পাবলিক লাইব্রেরি প্রাঙ্গণ থেকে টিএসসি হয়ে পুনরায় পাবলিক লাইব্রেরিতে এসে শেষ হয়।
বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় উৎসবের দ্বিতীয় পর্ব। আহমাদুল হাসান হাসনু, নাদিমুল ইসলাম ও রুমানা রুমার আবৃত্তির মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠানের। আবর্তন উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচারণ পর্বে শিক্ষার্থীরা কণ্ঠশীলন নিয়ে তাদেও ভাবনা বিনিময় করেন। কল্পরেখার শিশুদেও পরিবেশনার পরে ওয়াহিদুল হকের জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করে বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ। স্বরশ্রুতির দলীয় আবৃত্তির পরে আলোচনা করেন মানবাধিকারকর্মী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়–য়া। মনোমুগ্ধকর পুথি পাঠ করেন এথেন্স শাওন। এরপর গীটারে সংগীত পরিবেশন করেন অংকন রানা। একক আবৃত্তিতে অংশগ্রহণ করেন বিশিষ্ট আবৃত্তিশিল্পী রূপা চক্রবর্তী, বেলায়েত হোসেন, রেজীনা ওয়ালী লীনা, অলোক বসু, ইকবাল খোরশেদ, ফয়জুল আলম পাপপু, কাজী মাহতাব সুমন, আহসান উল্লাহ তমাল, মনিরুল ইসলাম ও কায়সার রিজভী।
লিটন বারুরীর নির্দেশনায় কণ্ঠশীলন প্রযোজনা ময়মনসিংহ গীতিকা থেকে “কঙ্ক ও লীলা” আবৃত্তি প্রযোজনা পর জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে প্রথম দিনের অনুষ্ঠান।