নাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা, বাংলা সংস্কৃতির অন্যতম দিকপাল, মঞ্চের কান্ডারী সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ। মঞ্চ নাটকের নির্দেশনা দিয়েছেন, অভিনয় করেছেন, চলচ্চিত্র অভিনয় থেকে হয়ে উঠেছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা। বাংলা সংস্কৃতিকে নিয়ে গেছেন বিশ্ব দরবারে। এই সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের আজ ৬৮তম জন্মদিন। কালচারাল ইয়ার্ডের পক্ষ থেকে এই মঞ্চসারথীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা। শুভ জন্মদিন হে গুণী।
প্রখ্যাত নাট্যকার সেলিম আল দীনের সঙ্গে নাট্যক্রম মঞ্চদল থেকে নাট্য নির্মাণ শুরু করেছিলেন স্বাধীনতার পর পর। বাহাত্তরের শেষের দিকে দু’জন মিলে প্রতিষ্ঠা করেন ঢাকা থিয়েটার। পাশ্চাত্য ধারার কিছু নাটকের মঞ্চায়ন করেন তিনি। এ সময় সেলিম আল দীনের রচিত নাটকের নির্দেশনা দেন নাসিরউদ্দিন ইউসূফ বাচ্চু। কীত্তনখোলা, কেরামতমঙ্গল, প্রাচ্য ও নিমজ্জনসহ অনেক নাটক নির্মাণ করেন তিনি। দেশি মঞ্চ নাটককে তিনি নিয়ে যান বিশ্বদরবারে। পরিচয় করিয়ে দেন বাংলার সংস্কৃতিকে। তাঁর নির্দেশনায় ২০১২ সালে বিশ্বখ্যাত গ্লোব থিয়েটারে প্রথম বাংলাভাষার নাটক হিসেবে উইলিয়াম শেক্সপিয়রের দ্যা টেম্পেস্ট নাটকটি মঞ্চস্থ হয়। বিখ্যাত লেখক আলবেয়ার কাম্যুর আলোচিত উপন্যাস দ্য স্ট্রেঞ্জার থেকে মঞ্চ নাটক আউটসাইডার মঞ্চায়ন করেন ।
১৯৮০ সালে চলচ্চিত্রকার সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকির চলচ্চিত্র ঘুড্ডিতে তিনি বাচ্চু চরিত্রে অভিনয় করেন। কিন্তু এরপরই চলচ্চিত্র নির্মাণের চিন্তা করেন। ১৯৯৩ সালে মুক্তিযুদ্ধকে উপজীব্য করে নির্মাণ করেন তাঁর প্রথম চলচ্চিত্র একাত্তরের যীশু। এরপর তিনি ২০১১ সালে নির্মাণ করেন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সিনেমা গেরিলা।
চলচ্চিত্রটি বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশগ্রহণ করে। কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এশিয়ার সেরা চলচ্চিত্র ও মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার-এর সমালোচক শাখায় শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরস্কার অর্জন করে চলচ্চিত্রটি।
তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পুরস্কার একুশে পদক অর্জন করেন। এছাড়াও অর্জন করেন ফজলুল হক স্মৃতি পুরস্কার, নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন পদক এবং নরেন বিশ্বাস পদক।
তাঁর সহধর্মীনী মঞ্চকুসুম শিমূল ইউসুফ ও সন্তান চলচ্চিত্রকর্মী এষা ইউসূফ।
তাঁরা তিনজনই বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের শিক্ষা ও কারিকুলাম প্রণয়নে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।