নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশের কিংবদন্তি প্রয়াত চিত্রনায়ক নায়করাজ রাজ্জাকের বায়োপিক প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করলেন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ। দেড় ঘন্টার এই পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রামাণ্যচিত্র ২১ আগস্ট নায়করাজের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে সিনেপ্লেক্সে মুক্তি দেয়া হচ্ছে। প্রামাণ্যচিত্রের নাম ‘রাজাধিরাজ রাজ্জাক’। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রথম কোনো প্রামাণ্যচিত্র হলে মুক্তি পাচ্ছে।
বাংলা চলচ্চিত্রের এই কিংবদন্তীর জীবন ও ক্যারিয়ারের জানা অজানা বিভিন্ন দিক উঠে এসেছে এই প্রামাণ্যচিত্রে।‘রাজাধিরাজ রাজ্জাক’ শুক্রবার চ্যানেল আইয়ের পর্দায় আগে দেখানো হয়েছে। এরপর ২১ আগস্ট সিনেপ্লেক্সে মুক্তি পাচ্ছে এটি।
এর আগে গত ১৬ আগস্ট চ্যানেল আই ভবনে দেখানো হয় ২৭ মিনিটের ‘রাজাধিরাজ রাজ্জাক’-এর সংক্ষিপ্ত ভার্সন। এ আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা, অভিনেত্রী, নির্মাতা, চিত্রসমালোচক, কণ্ঠশিল্পী, সুরকার, গীতিকারসহ রাজ্জাকের পরিবারের সদস্যরা।
প্রামাণ্যচিত্রটি দেখার পর উপস্থিত অতিথিরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। এ সময় নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেন নায়করাজ রাজ্জাকের স্ত্রী খায়রুন্নেসা লক্ষ্মী। তিনি মাইক্রোফোন হাতে কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে বলেন, শাইখ সিরাজ সাহেবকে ধন্যবাদ জানাই। রাজ্জাক সাহেবকে নিয়ে তিনি যে অনুষ্ঠানটি নির্মাণ করলেন এর জন্য তার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আগামী ২১ আগস্ট রাজ্জাক সাহেবের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী, তার জন্য আপনারা সবাই দোয়া করবেন। তার আত্মা যেন শান্তিতে থাকে।
কথা বলেন আয়োজনে উপস্থিত তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন, এফডিসির সামনে নায়করাজের নামে রাস্তার নাম করণের ক্ষমতা আমার নেই। এটা সিটি কর্পোরেশনের কাজ। তবে এই প্রস্তাবটি তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে আমি পাঠাতে পারি। আমি মনে করি, শুধু রাস্তার নাম নয়, চলচ্চিত্র যেখানে নির্মাণ হয় সেখানে ওনার (নায়করাজ রাজ্জাক) স্থাপনা করতে হবে।
তিনি বলেন, নায়করাজ রাজ্জাককে আমি চিনি সিনেমার পর্দার মাধ্যমে। সেই ৬০-এর দশক থেকে। ৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারত যখন যুদ্ধ হলো সেই যুদ্ধের পরেই পাকিস্তানি চলচ্চিত্র বিশেষ করে ভারতীয় বোম্বে ও কলকাতার ছবি আসা বন্ধ হয়ে গেল। ওই যুদ্ধের আগ পর্যন্ত লাহোর, বোম্বে এবং কলকাতা এই তিন জায়গার নির্মিত ছবি প্রদর্শিত হতো। তখন নায়করাজের আগমন হয়েছিল। ধীরে ধীরে তিনি হয়ে ওঠেন বাংলা চলচ্চিত্রের গন্ধরাজ। নায়করাজের হাত ধরেই বাংলা চলচ্চিত্রের উত্থান ও বিকাশ লাভ করে। তিনি বাঙালি নায়ক, জাত অভিনেতা।
সবশেষে তথ্যমন্ত্রী চ্যানেল আই ও শাইখ সিরাজ নায়করাজ রাজ্জাককে নিয়ে যে প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছেন তার এমন উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতে চলচ্চিত্রে আরো যারা প্রবীণ অভিনেতা অভিনেত্রী রয়েছেন তাদেরকে নিয়েও সরকারিভাবে ‘রাজাধিরাজ রাজ্জাক’-এর মতো জীবনী নির্ভর প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণের উদ্যোগ নিবেন বলেও জানান।
সেখানে উপস্থিত ছিলেন ইমপ্রেস টেলিফিল্ম ও চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, সৈয়দ আব্দুল হাদী, অভিনেতা ফারুক, গীতিকার ও পরিচালক মাজহারুল আনোয়ার, আমদাজ হোসেন, খুরশীদ আলম, চিত্রসমালোচক শফিউজ্জামান খান লোদী, রন্ধন বিশেষজ্ঞ কেকা ফেরদৌসী, শহীদুল আলম সাচ্চু, আলাউদ্দিন আলী, সুজাতা, মিশা সওদাগর, ফেরদৌস, পূর্ণিমা, নায়করাজ রাজ্জাকের স্ত্রী খায়রুন্নেসা লক্ষ্মী, দুই পুত্র বাপ্পারাজ ও সম্রাট।