ঢাকার নগরপিতার দায়িত্ব নিয়ে যিনি বদলে দিতে চেয়েছেন এই নোংরা নগরকে। শপথ করেছিলেন জঞ্জাট সরিয়ে এক আধুনিক ঢাকা করার। সেই স্বপ্নবাজ মেয়র আনিসুল হক দুই দশক আগেই এই শহরের মানুষের মন জিতেছিলেন। নব্বই দশকে বিটিভির উপস্থাপক হিসেবে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন তিনি। তাঁর বাচন ভঙ্গি, শুদ্ধ উচ্চারণে বাংলা বলাসহ অভিনব উপস্থাপনা পদ্ধতির কারণে সবার কাছে প্রিয় হয়ে উঠেন তিনি। ১৯৯৫ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর তাঁর উপস্থাপনায় বিটিভিতে প্রচার হয় ‘জলসা’। অনুষ্ঠানের প্রযোজক ছিলেন নওয়াজিশ আলী খান। সেখানে দেশের সেরা সেরা সব সেক্টরের শিল্পীরা এক হয়েছিলেন। উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন সময়ের খ্যাতনামা সব সঙ্গীত ও সাহিত্য বিশারদ। বাংলাদেশি সব ব্যান্ড দলগুলোও হাজির ছিলো সেখানে। ৩০ নভেম্বর আনিসুল হকের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মরণ করেছেন তাঁর ভক্তরা।
কালচারাল ইয়ার্ড এই স্বপ্নবাজ নগরপিতাকে, জলসা’র কারিগরকে স্মরণ করছে। পুরনোর সাথে নতুনের কোনো দ্বন্দ্ব আছে কিনা, বা নতুনকে কীভাবে বরণ করেন পুরনোরা ‘জলসা’র সেই আলোচনায় এসব স্পষ্টভাবেই তুলে ধরেছিলেন আনিসুল হক। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিল্পী মোস্তফা মনোয়ার, কলিম শরাফী, আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, খান আতাউর রহমান, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, সুবীর নন্দী, নীলুফার ইয়াসমিন, সাদিয়া আফরীন মল্লিক, রেনেসাঁ, ফিডব্যাক, মাইলস এবং সোলসের সদস্যরা। প্রায় দুই যুগ পরেও যে অনুষ্ঠানটিকে স্মরণ করছে সবাই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আনিসুল হককে স্মরণ করছে মানুষ। নতুন ঢাকা গড়ার কারিগরের কাছে যে আরও কিছু স্বপ্নপূরণের আছে নগরের মানুষের।
একজন মিষ্টভাষী টেলিভিশন উপস্থাপককেও অনুভব করছে ভক্তরা। নব্বই দশকের বিটিভির সেই ‘জলসা’র অ্যাপিসোডকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সেই অ্যাপিসডকে শেয়ার দিয়ে আনিসুল হকের স্মৃতিতে ভাসছেন নগরবাসী। এর বেশিরভাগই শোবিজ অঙ্গনের মানুষ। ছোট ও বড় পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা আনিসুল হকের উপস্থাপনায় ‘জলসা’র সেই ভিডিওটি শেয়ার করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তিনি লিখেছেন, ‘এমন অনুষ্ঠানও হতো। আনিসুল হক নেই এক বছর। সময় কত দ্রুত যায় …।’
এক দর্শক ‘জলসা’ অ্যাডিসড শেয়ার দিয়ে লিখেছেন, উপস্থাপনায় সর্বকালের অন্যতম সেরা প্রয়াত আনিসুল হক। তার উপস্থাপনায় একটা অনুষ্ঠান দেখেছিলাম সেই ছোট বেলায় বিটিভিতে। ওটার রেশ এখনও কাটেনি। অনুষ্ঠানটার বিশেষত্ব ছিল, ওখানে বিভিন্ন মাধ্যম ও পর্যায় থেকে শিল্পীদের এনে একটা ফিউশন ঘটানোর চেষ্টা করেছিল আনিসুল হক সাহেব। বলতে গেলে শতভাগ সফলও হয়েছিলেন। এরকম অনুষ্ঠান এখন হচ্ছে না। হবে কীভাবে, এখন সবাই ই সবার প্রতিদ্বন্দ্বী। আমার দেখা বিটিভির অন্যতম পরিবেশনা ছিল সেটা।
এভাবেই জলসা’র মাধ্যমে ফিরে আসছেন যেন আমাদের স্বপ্নের কারিগর জলসা’র কারিগর আনিসুল হক।