নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশের কিংবদন্তি চলচ্চিত্র অভিনেতা ও পরিচালক আমজাদ হোসেন সমাধিত হবেন ঢাকার মিরপুরস্থ শহীদ বুদ্ধিজীবী করবস্থানে। স্ত্রী সুরাইয়া আকতারের ইচ্ছাতেই তাঁকে সেখানে দাফন করা হবে বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
বরেণ্য এই চলচ্চিত্রকারের বড় ছেলে অভিনেতা ও নির্মাতা সাজ্জাদ হোসেন দোদুল বলেন, মায়ের ইচ্ছাতেই বাবাকে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাধিত করা হবে।
তিনি জানান, আমজাদ হোসেনের মৃতদেহ এখন ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে রয়েছে। রবিবার অথবা সোমবার সকালের মধ্যে তাঁর লাশ দেশে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
গত শুক্রবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৫৭ মিনিটে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে আমজাদ হোসেন মারা গেছেন। এর আগে গুরুতর অসুস্থ হলে গত ২৭শে নভেম্বর রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ইমপালস হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। এরপর প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে। সেখানে জরুরী বিভাগে তাঁর চিকিৎসা চলছিলো।
আমজাদ হোসেন ১৯৪২ সালের ১৪ই আগস্ট জামালপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি শৈশব থেকেই সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। তিনি সাহিত্য ও নাট্যচর্চার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এরপর তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘তোমার আমার’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তাঁর হাতে খড়ি। এরপর আরও কিছু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এরপর তিনি জহির রায়হানের সঙ্গে সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯৬৭ সালে ‘জুলেখা’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে পরিচালনা শুরু করেন তিনি।
১৯৭৮ সালে ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ এবং ১৯৮৪ সালে ‘ভাত দে’ চলচ্চিত্র নির্মাণ করে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। তাঁর পরিচালিত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে, পিতাপুত্র, বাল্যবন্ধু, এই নিয়ে পৃথিবী, নয়নমণি, সুন্দরী, কসাই, জন্ম থেকে জ্বলছি, দুই পয়সার আলতা, সখিনার যুদ্ধ, হীরামতি, প্রাণের মানুষ, সুন্দরী বধূ, কাল সকালে, গোলাপী এখন ঢাকায়, গোলাপী এখন বিলেতে ইত্যাদি।
শিল্পকলায় অবদানের জন্য ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক তিনি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদকে ভূষিত হন। এছাড়া স্বাধীনতা পুরস্কার, বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার।