নিজস্ব প্রতিবেদক :
সদ্যপ্রয়াত চলচ্চিত্র নির্মাতা, অভিনেতা ও গীতিকার আমজাদ হোসেনের প্রতি সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় আবেগাপ্লুত তাঁর দুই সন্তান সাজ্জাদ হোসেন দোদুল ও সোহেল আরমান।
বড় ছেলে সাজ্জাদ হোসেন দোদুল বলেন, আমার বাবা গান লিখেছেন- ‘গাছের একটা পাতা পড়লে/কাছের একজন মানুষ মরলে কে তার খবর রাখে?’ আমি আজকে বাবাকে বলবো, বাবা। দেখো, সারা বাংলাদেশ আজকে তোমার খবর রাখছে, সারা বাংলাদেশ আজকে তোমার জন্য কাঁদছে।
আর ছোট ছেলে সোহেল আরমান বলেন, দেশের প্রতি আমজাদ হোসেনের যে ভালোবাসা সেই কারণে মৃত্যুর আগে দেশও তাকে সেই ভালোবাসা ফিরিয়ে দিয়েছে।
সকালে শহীদ মিনারে বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসা আপামর মানুষদের উদ্দেশ্য করে ছোট ছেলে সোহেল আরমান বলেন, একজন শিল্পী যে সম্মান নিয়ে পৃথিবী থেকে যেতে চান, আমার বাবাকে সেই সম্মানই দেওয়া হচ্ছে। মৃত্যুর আগে আমজাদ হোসেন সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সেবা পেয়ে গেছেন। আর সে জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।
তিনি বলেন, বাবা অসুস্থ হলে শুরুতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ উদ্যোগে তার চিকিৎসার ব্যয়ভার গ্রহণ করেছেন। সহায়তা দিয়ে ব্যাংককে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। দেশের মানুষ বাবার সুস্থতা কামনায় কেঁদেছেন। একজন শিল্পীর চলে যাওয়ার সময় এর চেয়ে প্রাপ্তি আর হতে পারে না।
সোহেল আরমান বলেন, বাবা এই দেশটাকে মনে প্রাণে ভালোবাসতেন। তিনি সব সময় আমাদের বলতেন, এই দেশকে স্বাধীন করে দিয়ে গেছি, সব সময় ভালোবাসবে। এই দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবাসবে। এতো ভালোবাসার কারণেই বোধহয় বাবা এই দেশ ও দেশের মানুষের ভালোবাসা নিয়েই বিদায় নিলেন।
বড় ছেলে সাজ্জাদ হোসেন দোদুল বলেন, আমার বাবা ছিলেন নির্লোভ একজন মানুষ। তিনি দেশকে নিজের থেকেও বেশী ভালোবাসতেন। সেই ‘জীবন থেকে নেয়া’ থেকে শুরু করে ‘কাল সকালে’ পর্যন্ত তার কলম যেভাবে চলেছে, তার চেতনা যেভাবে চলছে, তার বুদ্ধি যেভাবে চলেছে তা অপূর্ব, অসাধারণ।
দোদুল বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সিনেমা আমার বাবা নির্মাণ করেন। সিনেমার নাম ছিলো ‘বাংলার মুখ’, আমরা সেই সিনেমার পোস্টার দেখেছি। একাত্তরের যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে এই ছবিটির দৃশ্য ধারণ করা হয়। কিন্তু এফডিসি থেকে কোনো কালো হাত সেই ছবির পিকচার ও সাউন্ড নেগেটিভ গায়েব করে দেয়। যদি ‘বাংলার মুখ’ আলোর মুখ দেখতো তাহলে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম চলচ্চিত্র হিসেবে উচ্চারিত হতো আমার বাবার ছবির নাম, ‘ওরা ১১ জন’ নয়।