নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলা গানের কিংবদন্তী শিল্পী কবির সুমন। প্রতিবাদী গানের অন্যতম সুরসৈনিক। তাঁর বিপ্লবী গান দু দেশের দুই বাংলায় তরুণ সমাজকে উদ্বেলিত করে, প্রতিবাদী করে, বিপ্লবী মন্ত্রে উজ্জীবিত করে। তাঁর গানে দর্শন, ধর্ম, সমাজ, রাজনীতি সকল কিছু স্থান করে নেয়। আধুনিক গান ও রবীন্দ্রসঙ্গীতেও তিনি অনন্য। তিনি একজন রবীন্দ্র গবেষকও। এখন পর্যন্ত দুই বাংলায় সমান জনপ্রিয় তিনি। প্রতিবাদী গানের এই শিল্পীর ৭০তম জন্মদিন আজ। কালচারাল ইয়ার্ড পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা।
গায়ক, গীতিকার, অভিনেতা, বেতার সাংবাদিক ও গদ্যকার কবির সুমন ১৯৪৯ সালের ১৬ মার্চ পশ্চিমবঙ্গে জন্মগ্রহণ করেন। পারিবারিক নাম সুমন চট্টোপাধ্যায়। ২০০০ সালে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে পুরনো নাম ত্যাগ করেন। ১৯৯২ সালে তাঁর ‘তোমাকে চাই’ অ্যালবামের মাধ্যমে বাংলা গানে এক নতুন ধারার প্রবর্তন করেন তিনি। গীত রচনা, সুরারোপ, সংগীতায়োজন ও কণ্ঠদানের পাশাপাশি গদ্যরচনা ও অভিনয়েও তিনি অনন্য। এছাড়াও তিনি একাধিক প্রবন্ধ, উপন্যাস ও ছোটোগল্প রচনা করেন তিনি। তিনি বাংলাদেশি গায়িকা সাবিনা ইয়াসমিনকে বিয়ে করেন।
এছাড়া তিনি রাজনীতিতেও সম্পৃক্ত। নন্দীগ্রাম গণহত্যার পরিপ্রেক্ষিতে কৃষিজমি রক্ষার ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত আন্দোলনে তিনি সক্রিয়ভাবে যোগদান করেন। ২০০৯ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে দেশের পঞ্চদশ লোকসভা নির্বাচনে অংশ নিয়ে ওই কেন্দ্র থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। তাঁর উল্লেকযোগ্য গানের অ্যালবামের মধ্যে রয়েছে: তোমাকে চাই, বসে আঁকো, ইচ্ছে হল, গানওলা, ঘুমাও বাউণ্ডুলে, চাইছি তোমার বন্ধুতা, জাতিস্মর, নিষিদ্ধ ইস্তেহার, পাগলা সানাই, যাব অচেনায়, নাগরিক কবিয়াল, আদাব, রিচিং আউট, দেখছি তোকে, তেরো, নন্দীগ্রাম, রিজওয়ানুরের বৃত্তসহ অসংখ্য।
এছাড়া তাঁর উল্লেখযোগ্য প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে: ডিসকভারিং দি আদার অ্যামেরিকা: র্যাডিকাল ভয়েসেস ফ্রম দি নাইনটিন এইটিজ ইন কনভার্সেশন উইথ কবীর সুমন (২০১২), সুমনামি, মন-মেজাজ, আলখাল্লা, হয়ে ওঠা গান, কোন পথে গেল গান, সুমনের গান, সুমনের ভাষ্য, সুমনের গান, মুক্ত নিকারাগুয়া, দূরের জানলা
নিশানের নাম তাপসী মালিক।
কবীল সুমন ১৯৯৭ সালে ভাই’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে বিএফজেএ পুরস্কার পান। জাতিস্মর চলচ্চিত্রের জন্য ২০১৪ সালে শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। ওই বছরই শ্রেষ্ঠ সুরকার হিসেবে মিরচি মিউজিক অ্যাওয়ার্ড বাংলা পুরস্কার পান তিনি। তিনি ২০১৫ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক সংগীত মহাসম্মান-এ ভূষিত হন।