চলচ্চিত্র নির্মাতা, লেখক ও সংগঠক বেলায়াত হোসেন মামুন। তিনি ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক এবং ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি’র প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি। বর্তমানে ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পর্ষদ’র জাতীয় কমিটির আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। জাতীয় চলচ্চিত্র অনুদান নীতিমালা নিয়ে বিতর্ক, চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন আইন, জাতীয় চলচ্চিত্র সম্মেলন, চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলন ও এর ভবিষ্যতসহ নানা বিষয় নিয়ে কালচারাল ইয়ার্ড’র সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাতকার নিয়েছেন আমাদের বিশেষ প্রতিনিধি রোমান কবির।
(আজ প্রকাশিত হলো সাক্ষাতকারের দ্বিতীয় পর্ব)
কালচারাল ইয়ার্ড: ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড’র নাম বদলে ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড’ করা হচ্ছে। নামকরণের এই পরিবর্তন কি সেন্সরবিধিতে কোনো নীতিগত পরিবর্তন আনবে?
বেলায়াত হোসেন মামুন: আমরা দীর্ঘদিন ধরে যে চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড চেয়েছি এটা সেই ধরণের ‘সার্টিফিকেশন’ বোর্ড হবেনা। ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ হওয়ার পর আজ পর্যন্ত যতগুলো চলচ্চিত্র সেন্সর করা বিষয়ক আইন হয়েছে, সে সব আইন সংস্কার করে যদি শিল্প ও শিল্পীর স্বাধীনতার নিরঙ্কুশ অধিকার দেয়া না হয় অথবা সে সব দমনমূলক আইনগুলো বাতিল না করা হয় তবে সেন্সর বোর্ডের নাম বদলের কোনো অর্থ নেই। সেক্ষেত্রে সার্টিফিকেশন আইন বেসিক্যালি একটি আইওয়াশ। কারণ এই আইনে যদিও এক ধরণের গ্রেডেশন রাখা হয়েছে এবং সেই গ্রেডিং পদ্ধতিটাই চূড়ান্ত কিছু নয়। এই আইনের বিভিন্ন ধারা উপধারায় চলচ্চিত্রকে নিষিদ্ধ করা, প্রদর্শনীকে সীমাবদ্ধ করা এবং নির্মাতাকে নানারকমভাবে হয়রানি করার সকল বিধি ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ফলে এটা পরিষ্কারভাবে বলা যায় যে, চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন আইন ২০১৯ এই আইনটি নিয়ে আরও অধিকতর আলোচনা হওয়া দরকার, তর্ক বিতর্ক হওয়া দরকার। এবং এ আইনটি এখন যে অবস্থায় আছে তা আমরা চাই কিনা অথবা কি ধরণের পরিবর্তন আইনটিতে আনা উচিত তা সকলের আরও গভীরভাবে যাচাই বাছাই করা দরকার। কারণ এভাবে এই আইনটি হয়ে গেলে কাজের কাজ কিছুই হবে না। উল্টো একটি নতুন মুসিবত হিসেবে হাজির হবে।
আমি আইনটির খসড়া একাধিকবার পড়েছি। আমার স্পষ্ট মনে হয়েছে এই আইনে চলচ্চিত্র মাধ্যমটির, চলচ্চিত্র নির্মাতাদের এবং চলচ্চিত্র কর্মীদের ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশনের কোন সুরক্ষা বা অঙ্গিকার নেই। ফলে এই আইনটাকে অনেকখানি বদলাতে হবে। এই আইনটার আমূল সংস্কার করা খুব জরুরী।
কালচারাল ইয়ার্ড : ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন আইন’র খসড়া রুপরেখার প্রেক্ষিতে চলচ্চিত্র সংসদ ফেডারেশন থেকে কোন সুপারিশ দিবেন কিনা?
বেলায়াত হোসেন মামুন : ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ অব বাংলাদেশ ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন আইন’র খসড়া রুপরেখা নিয়ে একটি জাতীয় চলচ্চিত্র সভা আহ্বান করবে। সে বিষয়ে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা সে বিষয়ে কাজ করছি। আমরা আশা করছি সভাটি সেপ্টেম্বর মাসেই হবে। সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই আইনের খসড়াটি আইন বিষয়ক কয়েকজন এক্সপার্টের কাছে আমরা পাঠিয়েছি, যারা সংস্কৃতি বিষয়ে ওয়াকিবহাল মানুষ আমরা তাদের মতামত নিচ্ছি। জাতীয় চলচ্চিত্র সভায় সারাদেশের নেতৃস্থানীয় চলচ্চিত্র সংসদকর্মীরা যোগ দিবেন। সেখানে আমরা আমাদের পর্যালোচনা ও আইনটি কীভাবে সংস্কার করা যায়, সেই সুপারিশগুলো হাজির করবো। এ ধরণের সভা চলচ্চিত্র বিষয়ক ভাবনাকে একত্র করার কাজে খুব ভালো ভূমিকা রাখে।
কালচারাল ইয়ার্ড : ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পর্ষদ’ নামে একটি সংগঠন করেছেন। দেশের বিভিন্ন বিভাগে বিভাগীয় সম্মেলন করেছেন। এর সার্বিক প্রেক্ষাপট, অগ্রগতি ও ভবিষ্যত সম্পর্কে যদি বিস্তারিত বলেন।
বেলায়াত হোসেন মামুন : বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পর্ষদ হয়েছে মূলত চলচ্চিত্রকর্মীদের চাওয়া থেকে। দেশে অনেক ধরণের সংগঠন আছে, যারা চলচ্চিত্র নিয়ে কাজ করছেন। সারাদেশে সক্রিয় বলতে আমরা দেখতে পাই বেশ কিছু চলচ্চিত্র সংসদ বা ফিল্ম সোসাইটি সারাবছর কাজ করছে। এর বাইরে এফডিসি কেন্দ্রিক অনেকগুলো সমিতি আছে। আরও কিছু সংগঠন আছে যারা চলচ্চিত্র চর্চা ও উৎসব আয়োজনের কাজটি করেন। কিন্তু ভাববার বিষয় হলো চলচ্চিত্রে যে হাজার হাজার নতুন তরুণেরা উঠে আসছেন এবং সারাদেশে চলচ্চিত্র সংস্কৃতির যে অবনমন, একটা নিম্নমুখিনতা, যদি তা কেবলমাত্র চলচ্চিত্র সংস্কৃতির নয়, সামগ্রিকভাবে দেশের সংস্কৃতিচর্চার মান জাতীয়ভাবেই নিচে নেমে গেছে। সেগুলো নিয়ে কাজ করবার মতো দীর্ঘদিন ধরে কোনো প্লাটফর্ম দেখতে পাচ্ছি না। এমন কোনো প্লাটফর্ম না থাকায় অথবা যাঁরা আছেন তারা আর সক্রিয় না থাকায় এক ধরণের শূন্যতা দেখা যাচ্ছে। এই শূন্যতার অনুভব থেকে এবং প্রয়োজনের তাগিদ থেকে এমন একটা প্লাটফর্ম তৈরি হয়েছে, যা জাতীয়ভাবে সারাদেশে কাজ করবে। দেশের প্রত্যেকটি বিভাগ এবং জেলায় কাজ করবে। সেরকম একটা চিন্তার জায়গা থেকে আমরা চলচ্চিত্রকর্মীদের একত্রিত বা সম্মিলিত করার ইচ্ছায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পর্ষদ গঠন করেছি।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পর্ষদ আসলে স্বাধীন চলচ্চিত্র আন্দোলনকে চর্চা করা, জারি রাখা এবং স্বাধীন চলচ্চিত্রের এই আন্দোলনকে ‘আন্দোলন’ হিসেবে দাঁড় করানোর কাজটি করবে। পাশাপাশি চলচ্চিত্রকর্মী, নির্মাতা থেকে শুরু করে অভিনয়শিল্পী, সকল পর্যায়ের কলাকুশলী; চলচ্চিত্রের ক্যামেরার সামনে অথবা পেছনে যারা কাজ করেন, তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোকে নিয়ে সম্মিলিতভাবে লড়বার অভিপ্রায় নিয়ে এই পর্ষদের গোড়াপত্তন হয়েছে।
ইতোমধ্যে পর্ষদের পাঁচটি বিভাগীয় সম্মেলন হয়ে গেছে। আরও দু’টি বিভাগের সম্মেলন খুব শীঘ্রই হবে। এরপর ঢাকার সম্মেলন হবে। ঢাকা বিভাগের সম্মেলনের পর একটি বিরতি দিয়ে তারপর জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করা হবে। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পর্ষদের জাতীয় সম্মেলনে দেশের আট বিভাগের ৬৪ জেলার সকল চলচ্চিত্রকর্মী অংশগ্রহণ করবেন।
চলচ্চিত্রকর্মীদের জাতীয় সম্মেলনে সবাই আমরা খুঁজে দেখবো চলচ্চিত্রকর্মীদের জন্য আসলে কী কী বিষয় প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করছে অথবা কী কী বিষয়ে আমাদের আরও যত্নশীল হওয়া উচিত, যে সব ঠিকঠাক হলে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র সংস্কৃতি সত্যিকার অর্থে উন্নত ও বিকশিত হবে। এমন একটি দিকনির্দেশনা তৈরি করার জন্যই জাতীয় সম্মেলন হবে।
আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করবো যেন বাংলাদেশের স্বাধীন ও তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতারা বাংলাদেশে চলচ্চিত্রকে পেশা হিসেবে নিয়ে স্বস্থির জীবন পায়। যেন সকলে স্বাধীনভাবে চলচ্চিত্র নির্মাণের পরিবেশ এবং চলচ্চিত্রকে ইন্ড্রাস্ট্রি স্কেলে নিয়ে বিকশিত হওয়ার জন্য সহায়ক পরিবেশ ও সামাজিক ভিত্তি পায়। যেখানে তারা সকলে বেড়ে উঠতে পারে। এ জন্য বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পর্ষদ কাজ করতে শুরু করেছে এবং কাজ করবে।
আমরা জানি কাজটি অবশ্যই অনেক কঠিন। আমরা ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় যখন যাচ্ছি, আমরা দেখছি বিভিন্ন জেলায় সামগ্রিকভাবে সংস্কৃতিচর্চার মান অনেক নিচে পড়ে গেছে। আমরা মুখোশের আবরণের সংস্কৃতিচর্চা দেখছি। এটা সরকারি পর্যায়ে এক ধরণের দেখনদারি। কিন্তু এতে সমাজের অবক্ষয় রোধ করা যাচ্ছে না। আমাদের সমাজ অগ্রগামী না হয়ে অধিকতর পশ্চাদপদ হয়ে উঠছে। এসব তো খুব ভয়াবহ ব্যাপার। এটা শুধু চলচ্চিত্র চর্চার জন্য যে ভয়াবহ তা নয়। এটা দেশের সামগ্রিক সংস্কৃতিচর্চার পরিবেশের জন্য ভয়াবহ এবং আতঙ্কের। সমাজ যদি অনেক বেশি ভ্রষ্ট হয়ে যায় তবে তা নিরাময়ের অযোগ্য হয়ে উঠতে পারে। সে পরিস্থিতিতে যাওয়ার আগেই আমাদের অনেক কাজ করা দরকার। সবারই এ বিষয়ে অনেক বুনিয়াদী কাজ করা দরকার। ইভেন্ট আয়োজনের হাওয়াই মিঠাই ‘কাজ’ নয়। সত্যিকারের কাজ। আর সেটা আমার, আপনার এবং সবার জন্যই জরুরি।
আমরা এমন বহু জেলায় গেছি যেখানে গত ১০-১৫ বছর ধরে কোন সিনেমা হল নেই, সে সব জেলায় যারা এ সময়ে কিশোর অথবা সদ্য তরুণ তারা কখনও পাবলিকলি বড় পর্দায় চলচ্চিত্র দেখে নি। এটা ২০১৯ সাল এবং এটা বর্তমান বাংলাদেশের চিত্র। সন্দেহ নেই এটা খুব অস্বস্তির বিষয়। পাশাপাশি এটা দুঃশ্চিন্তারও বটে। অনেকে বিশেষ করে বহু আমলা এবং রাজনীতিবিদ মনে করেন এগুলো তেমন ভাবনার কিছু নয়। বরং এমন অনেক সরকারি কর্মচারির দেখা পেয়েছি যে তিনি গর্ব করে বলেছেন যে তাদের জেলায় কোনো সিনেমা হল নেই। তিনি মনে করেন সিনেমা হল না থাকায় ছেলেমেয়েরা ‘নষ্ট’ হওয়া থেকে বেঁচে যাচ্ছে!
২০১৯ সালেও এমন ভাবনার মানুষ থাকতে পারে তা এমন লোকজনের সাথে পরিচয় না হলে জানাই হত না। অতএব এটা স্পষ্ট যে, চলচ্চিত্রকে যদি সংস্কৃতি হিসেবে দেখতে হয় তবে আমাদের অনেক কাজ করতে হবে। কেবলমাত্র ঢাকাতে কিছু ইভেন্ট করে দেশের চলচ্চিত্র চর্চার মান দেশব্যাপি ভালো হবে না। আর তা ছাড়া ঢাকায় এখন প্রায় সোয়া দুই কোটি মানুষ বাস করে। তাদের জন্য খোদ রাজধানীতে কি এমন চলচ্চিত্রচর্চার ব্যবস্থা আছে? সত্যিকার অর্থে এসব পরিসংখ্যান ধরে আলোচনা করতে গেলে আমি উত্তেজিত হয়ে উঠি এবং রেগে যাই। কারণ বাংলাদেশের চলচ্চিত্র চর্চার পরিস্থিতি আসলে খুব খারাপ অবস্থায় আছে। আর তা নিয়ে খুব কম মানুষই ভাবিত। কিছু মানুষ যারা চলচ্চিত্র সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করেন তাদের বেশিরভাগের মধ্যে আন্তরিকতার ঘাটতি দেখতে পাই। আর এসব বিষয়ে সরকারি বা রাষ্ট্রীয় যত বিষয় আছে সেগুলোর কোনোটাই পুরোপুরি সঠিক চলছে তা বলতে পারবো না। অস্বচ্ছতা এবং দূর্নীতির অভিযোগ এসব লোকজনের বিরুদ্ধেও উঠছে। এটাও খুব দুঃখজনক ব্যাপার…
এ সকল পরিস্থিতির মাঝেই আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। এ সব পরিস্থিতিকে মোকাবেলা করে যদি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে গড়ে তুলতে হয়, বিকশিত করতে হয়; তাহলে অনেক কাজ করতে হবে। আমি আশাবাদী এবং বিশ্বাস করি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পর্ষদ দেশের চলচ্চিত্র সংস্কৃতির সার্বিক উন্নয়নে অনেক দৃঢ় ও ভালো ভূমিকা রাখবে।
কালচারাল ইয়ার্ড : জাতীয় চলচ্চিত্র কেন্দ্রের রুপরেখা দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছিলেন। ওই বিষয়ে অগ্রগতি কতটুকু?
বেলায়াত হোসেন মামুন : গত ৩ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র কেন্দ্র’ প্রতিষ্ঠার দাবিতে ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ অব বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। আমরা আশা করছি, এ বিষয়ে খুব শীঘ্রই ইতিবাচক ঘোষণা শুনতে পাবো। দেখুন, বাংলাদেশ বর্তমানে আর্থিকভাবে যতখানি সক্ষম রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে তাতে একটি জাতীয় চলচ্চিত্র কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা এমন কোন আহামরি ব্যাপার নয়। বর্তমান সরকার বিশেষ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুব করে চান, দেশের চলচ্চিত্রের মান উন্নত হোক। বিভিন্ন উপলক্ষে আমরা এ বিষয়ে ওনার আন্তরিক উৎসাহ লক্ষ্য করেছি। এছাড়া সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এবং বর্তমান তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। আর তাছাড়া ‘জাতীয় চলচ্চিত্র কেন্দ্র’ প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সবাইকেই খুব আন্তরিক মনে হয়েছে। তাই আশা করি, জাতীয় চলচ্চিত্র কেন্দ্র খুব শীঘ্রই হবে বা হওয়া উচিত।
জাতীয় চলচ্চিত্র কেন্দ্রের ধারণাটি আর দশটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতো নয়। এটি হচ্ছে একটি চলচ্চিত্র সংস্কৃতি কেন্দ্র। এখানে অনেকগুলো অডিটোরিয়াম থাকবে। সেমিনার রুম থাকবে। চলচ্চিত্র সংসদগুলোর বছরজুড়ে নানাবিধ একটিভিটি করার জন্য পর্যাপ্ত স্পেস থাকবে। একটি সুন্দর বড় পরিসরের ক্যাফেটেরিয়া থাকবে। যেখানে আমাদের অগ্রজ চলচ্চিত্রকারগণ তরুণদের সঙ্গে আড্ডা দিবেন। তরুণরা সমবয়সীদের সাথে আড্ডায়, স্ফূর্তিতে মেতে থাকবেন। এটি হবে এমন একটি কেন্দ্র যেখানে চলচ্চিত্রকর্মীদের মিলনমেলা ৩৬৫ দিন ধরে জারি থাকবে। এই কেন্দ্রটি হয়ে উঠবে দেশের চলচ্চিত্রকর্মীদের আশ্রয়স্থল। চলচ্চিত্রকর্মীদের অবাধ, স্বাধীন পরিসর হবে জাতীয় চলচ্চিত্র কেন্দ্র।
জাতীয় চলচ্চিত্র কেন্দ্র হবে দেশের নিরীক্ষাপ্রবণ তরুণ চলচ্চিত্রকর্মীদের স্বপ্নবোনার চারণভূমি। এখানে তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের সকল সম্ভাবনা থাকতে হবে। শিল্পচর্চার পরিসর হিসেবে এই কেন্দ্র হবে মুক্ত। এখানে অহেতুক আমলাতান্ত্রিক জটিলতা থাকার সুযোগ নেই। জাতীয় চলচ্চিত্র কেন্দ্র চলচ্চিত্রকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে, আমলাদের নিয়ন্ত্রণে নয়।
জাতীয় চলচ্চিত্র কেন্দ্র এমন একটি কেন্দ্র হবে, যেটি সপ্তাহে সাতদিন, সম্ভব হলে ২৪ ঘন্টা চলচ্চিত্রকর্মীদের আনাগোনায় মুখর থাকবে। জাতীয় চলচ্চিত্র কেন্দ্র চলচ্চিত্রকর্মীদের প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠবে- এ রকম স্বপ্ন আমরা দেখি। কিন্তু আমাদের দুশ্চিন্তা হয়, কারণ যখনই এ রকম কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ার প্রস্তাব ও দাবি তোলা হয় তখন তা আমলাদের হাতে পড়ে প্রস্তাবটি পরিবর্তিত হয়ে একটি সরকারি দপ্তরের সম্প্রসারণে পরিণত হয়। তা হয়ে ওঠে এমন একটি অফিস যেখানে কিছু সরকারি কর্মকর্তা চাকরি পান। যারা ১০টা- ৫টা চাকরি করেন। যারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সংস্কৃতিবিমুখ হোন। কার্যত সেই প্রতিষ্ঠানগুলো আর সংস্কৃতিকর্মীদের থাকে না। সেটি আমলাদের সরকারি দপ্তর হয়ে যায়। দেশের সব সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানই অলমোস্ট আমলাতান্ত্রিক হয়ে গেছে। আর তা সত্যিকার অর্থে সংস্কৃতিচর্চায় গুণগত কোনো উন্নতিতে ভূমিকা রাখতে পারে না। সংস্কৃতির চর্চা ও সাধনা ‘চাকুরির’ বিষয় নয়। এটা এই সব চাকরিজীবিরা মনে রাখেন না। তারা এ ধরণের প্রতিষ্ঠানকে তাদের পৈত্রিক অধিকারের বিষয়ের মত করে খবরদারি করতে শুরু করেন। যা অচিরেই প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কৃতিচর্চা তো দূরের বিষয় বরং তা মুক্ত সংস্কৃতিচর্চার বিরোধীতায় এসে হাজির হয়। এ ধরণের সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারাই তখন হয়ে ওঠেন সংস্কৃতিচর্চা বিরোধী সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধক। এটা দেশজুড়ে সবখানে হচ্ছে। দেশের সামগ্রিক সংস্কৃতিচর্চার বেহাল অবস্থার কারণও এসবের মধ্যেই আছে।
যদি এ ধরণের আরও একটি প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র কেন্দ্র’ তবে তা আমাদের দরকার নেই। তা থাকার চেয়ে না থাকা আরও ভালো। কিন্তু যদি জাতীয় চলচ্চিত্র কেন্দ্র চলচ্চিত্রকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে একটি মুক্ত সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে ওঠে তবে তা আমাদের স্বপ্নকে ধারণ করতে সক্ষম হবে। আর যদি তা হয়, তবে তা বাংলাদেশের চলচ্চিত্র সংস্কৃতিতে বড় রকমের গুনগত পরিবর্তনের কারণ হবে।
এখন পর্যন্ত এটা বাংলাদেশের দুভার্গ্য যে, স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও জাতীয় চলচ্চিত্র কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয় নি। যেখানে জাতীয় নাট্যশালা হয়েছে। জাতীয় চিত্রশালা হয়েছে। জাতীয় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র হয়েছে। তবে আমরা চলচ্চিত্রকর্মীরা কেন আমাদের একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ কেন্দ্র পাবো না? এটি তো খুব অন্যায্য একটা ব্যাপার। আমরা আশা করি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকর্মীদের সঙ্গে অন্যায্য পরিস্থিতির অবসান হবে। আমরা বিষয়টার সঙ্গে লেগে আছি, হাল ছাড়ছি না। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা লেগেই থাকবো।
কালচারাল ইয়ার্ড : তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে চলচ্চিত্রকে আনার একটি দাবি করেছিলেন। এ ব্যাপারে যদি বলেন-
বেলায়াত হোসেন মামুন : আমরা সব সময়ই চাই চলচ্চিত্র তথ্য মন্ত্রণালয়ে না থেকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে আসুক। কিন্তু আমরা নানাভাবে দেখেছি, সরকার বা বাংলাদেশের আমলাতান্ত্রিক সিস্টেম; তারা কখনো এটিকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে দিতে চায় না। এর কারণও আছে। ব্রিটিশ উপনিবেশ শাসনামল থেকেই বিষয়টি এ রকম যে, চলচ্চিত্রকে সরকার নানাভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। চলচ্চিত্রকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে আনার দাবি আমরা চলচ্চিত্রকর্মীরা করেছি। করছি এবং করে যাবো। কিন্তু আসলে এটি এখন পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয় নি। হওয়াটা একটু মুশকিল আছে।
চলচ্চিত্র সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে আসুক অথবা না আসুক, কিন্তু আমরা ‘জাতীয় চলচ্চিত্র কেন্দ্র’ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আওতায় চেয়েছি। এটি প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া স্মারকলিপিতে স্পষ্ট করে উল্লেখ করা আছে। আমরা চাইছি এটি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি পৃথক বা স্বতন্ত্র দপ্তর হিসেবে থাকবে। যেমন শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি আছে বা জাতীয় গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর আছে। এরকম পৃথক স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মতো চাইছি। মনে রাখতে হবে যে জাতীয় চলচ্চিত্র কেন্দ্র চলচ্চিত্র সংস্কৃতি চর্চার একটি প্রতিষ্ঠান। ফলে এটি হবে সরকারের একটি ভর্তুকি প্রতিষ্ঠান। জাতীয় চলচ্চিত্র কেন্দ্র থেকে সরকারের আয়ের কোন ব্যাপার নেই। এটি সংস্কৃতির সেবার জন্য। কিন্তু এটি যদি তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে হয়, তাহলে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মত এটি আরেকটি পুলিশি দপ্তর হবে। যা জাতীয় চলচ্চিত্র কেন্দ্রের মুক্ত ও অবাধ চরিত্রকে নষ্ট করে দেবে।
এ বিষয়ে সম্পূরক আরেকটা দাবি আমরা করেছি, চলচ্চিত্র সংস্কৃতিচর্চাকারী যত সংগঠন আছে, সেগুলোকে যেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে অনুদান দেয়া হয়। কারণ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে সকল সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানকে এক ধরণের আর্থিক অনুদান দেয়া হয়। চলচ্চিত্র সংগঠনগুলো এই অনুদানের বাইরে। তথ্য মন্ত্রণালয় আমাদের কোন অনুদান দেয় না। বরং নানারকম আইন কানুন দিয়ে আমাদের কাজকে সীমাবদ্ধ করার চেষ্টা করে। আমরা চাই চলচ্চিত্র সংসদগুলোকে সরকার সাংস্কৃতিক সংগঠন হিসেবে দেখুক এবং আর্থিকভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করুক।
বাংলাদেশে ৫৬ বছর ধরে চলচ্চিত্র সংসদের কার্যক্রম আমরা করছি। কিন্তু চলচ্চিত্র সংসদ কার্যক্রমের জন্য এখন পর্যন্ত আর্থিক কোনো পৃষ্ঠপোষকতা আমরা পাইনি। আর বিষয়টি অবাক করার মত বটে! চলচ্চিত্র সংস্কৃতিচর্চার বিষয়টিকে সরকার কেন সাংস্কৃতিক কাজ হিসেবে দেখবেন না?
আমরা একাধিকবার সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। একাধিকবার প্রধানমন্ত্রীর বেশ কয়েকজন উপদেষ্টাকে আমরা অবহিত করেছি। তারা আশ্বাস দিয়েছেন- এটি হবে। আমরা এ ব্যাপারে এখনও আশাবাদি। এটা হওয়া উচিত।
কালচারাল ইয়ার্ড : এখনও অনেকে চলচ্চিত্রকে এককভাবে পেশা হিসেবে নিতে পারছেন না। এখানে সংকটটা কোথায়? চলচ্চিত্রকে পেশা হিসেবে নেয়ার ক্ষেত্র কীভাবে তৈরি হবে ?
বেলায়াত হোসেন মামুন : বাংলাদেশে চলচ্চিত্রকর্মীদের মধ্যে যারা তরুণ তাদের কথা আর কি বলবো… যাঁরা জ্যেষ্ঠ, যারা অনেকদিন ধরে এই মাধ্যমে কাজ করেছেন; তারাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে এখন কাজহীনতার সংকটে আছেন। বাংলাদেশে যেটুকু ইন্ড্রাস্ট্রি ছিলো। যাকে আমি বলি এক ধরণের কুটির শিল্প। সেটা তো পেশাদারি কোন ব্যাপার ছিলো না। পেশাদারভাবে এই ইন্ডাস্ট্রি গড়েও ওঠে নি। যেহেতু এর কোন পেশাদারি কাঠামো গড়ে ওঠে নি। ফলে আমাদের চলচ্চিত্রকর্মীদের জন্য এই মাধ্যমে পেশার কোনো সুরক্ষা তৈরি হয় নি।
এখন যারা তরুণ আছেন, যারা চলচ্চিত্র মাধ্যমে যুক্ত হয়ে গেছেন অথবা হচ্ছেন, তাদের জন্য এই পরিস্থিতি স্বস্তির নয়। প্রযুক্তির কারণে হোক বা অন্য নানা কারণে হোক চলচ্চিত্র এখন বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম। চলচ্চিত্র নিয়ে এখন কেবল দেশ নয়, পুরো বিশ্বজুড়ে কাজ করার সুযোগ আছে। বাণিজ্য কেবল আর দেশের বাজারে সীমাবদ্ধ নয়। বাজার ধারণাটি এখন অনেক বড়। আমাদের এসব ধারনার সাথে সম্পৃক্ত হতে পারতে হবে। এটা সত্য যে, তরুণদের জন্য এই পরিস্থিতি রাতারাতি বদলে যাবে না। তবে বদলের কাজটি তো তাদেরই করতে হবে। এই কাজ অপর কেউ এসে তাদের জন্য করে দিয়ে যাবে না। তাই লড়াইটা শুরু থেকেই করতে হবে।
বাংলাদেশে চলচ্চিত্র মাধ্যমটির সাথে যুক্ত তরুণদের এই মাধ্যমটিতে কাজের ক্ষেত্রে একটি পেশাদার পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। কাজে দক্ষ হওয়ার পাশাপাশি পেশাদারও হতে হবে। পেশা হিসেবে যদি চলচ্চিত্রকে গ্রহণ করা যায় তবে দেশের চলচ্চিত্রের গুণগতমান বিকশিত হবে। কেবল শখ দিয়ে একটি চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি দাঁড়ায় না।
আর সার্বিকভাবে আমাদের সংস্কৃতির চর্চার মান খুবই নিচে নেমে গেছে। এই খারাপ অবস্থার ভিতরে চলচ্চিত্র তো পৃথক, বিচ্ছিন্ন কোন মাধ্যম নয়। অপরাপর সংস্কৃতির মধ্যে এটি একটি অন্যতম শক্তিশালী মাধ্যম। দেশজুড়ে যেহেতু এই মাধ্যমটির গভীর কোনো চর্চার পরিবেশ নেই, তখন কীভাবে একজন চলচ্চিত্র নির্মাণকর্মী ভাবতে পারেন যে তিনি সহজে তার পেশার সুরক্ষা পাবেন। চলচ্চিত্র মাধ্যমে পেশার সুরক্ষার কাজটি শুরু থেকে গড়ে তুলতে হবে। যারা এই চ্যালেঞ্জ নেবেন তাদের পথটি কঠিন, কিন্তু এটিই একমাত্র বুনিয়াদি পথ।
বাংলাদেশের ৫৬ হাজার বর্গমাইলের প্রতি ইঞ্চিতে আপনাকে লড়াই করতে হবে। চলচ্চিত্র মাধ্যমটির জন্য, এর ব্যবসায়িক কাঠামো গড়ে তোলার জন্য, শিল্প হিসেবে এর সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা তৈরির জন্য, আপনাকে এর প্রতিটি ক্ষেত্রে লড়াই করতে হবে। প্রত্যেক চলচ্চিত্রকর্মীকেই এই লড়াই করতে হবে তার জায়গা থেকে। সবাই যখন লড়াইটা করবে, তখনই কিন্তু সবার জন্যই কাজটি আর খুব কঠিন থাকবে না। তখন চলচ্চিত্রশিল্প ও শিল্পীর সব রকম সুরক্ষা সমাজে ও রাষ্ট্রে তৈরি হবে।
এটা সবাই জানেন, কেউ একা টিকতে পারবেন না। সবাইকেই প্রয়োজন আছে। সবারই পৃথক পৃথক ভূমিকা থাকে। সেই সহাবস্থানের সৌন্দর্য্য আমাদের জারি রাখা দরকার। এখন অনেক কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও যে দুই একজন ভালো আছেন, তারা চলচ্চিত্র মাধ্যম থেকে আয় করে ভালো আছেন, এমনটা নয়। নানা কিছুর সঙ্গে তারা যুক্ত আছেন। কেউ বিজ্ঞাপন বানাচ্ছেন কিংবা টেলিভিশনের কাজের সঙ্গে যুক্ত আছেন। বিভিন্ন কাজের সাথে যুক্ত থেকে নিজেদেরকে একটু ভালো পজিশনে রেখেছেন। তো এটা খুব সুস্থ তরিকা নয়। তরিকাটা বদলানো দরকার। আমি চলচ্চিত্র নিয়ে কাজ করি। আমি চলচ্চিত্র মাধ্যমটির উপরই নির্ভর করতে চাই। এটা এক ধরণের গর্বের মতো হবে, যখন আমরা চলচ্চিত্রের উপরই পেশাগতভাবে নির্ভর করতে পারবো। এটি নিয়ে যতক্ষণ পরিণতভাবে একজন অথবা সবাই না ভাবছেন। ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি যেমন ঝুঁকিতে আছেন, পুরো চলচ্চিত্র মাধ্যমটিই একই রকম ঝুঁকিতে রয়ে যাবে। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পর্ষদ এই বিষয়ে কাজ করার অঙ্গিকার নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আশা করা যায়, এই সব ভাবনা সবাই মিলে ভাবার সময় এসে গেছে। কারণ কেউ আর তেমন নিরাপদ নয়। সবাই যখন ঝুঁকিতে আছে তখন পরিস্থিতির বদল অনিবার্য।
কালচারাল ইয়ার্ড : আমাদেরকে সময় দেয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
বেলায়াত হোসেন মামুন : আপনাকেও ধন্যবাদ। কালচারাল ইয়ার্ড’র প্রতি রইলো অনেক অনেক ভালোবাসা ও শুভ কামনা।
সাক্ষাতকারের প্রথম পর্ব :