কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা ঋত্বিক ঘটকের রাজশাহী মিঞা পাড়ার পৈত্রিক ভিটা ভেঙ্গে ফেলে সেখানে গাড়ির গ্যারেজ নির্মাণের খবরে ফুঁসে উঠেছে সারাদেশের চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতিকর্মীরা। সম্মলিত ব্যানারে রাজশাহীতে মানবন্ধনের ডাক দেয় ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটি, রাজশাহী ফিল্ম সোসাইটি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ এবং বরেন্দ্র ফিল্ম সোসাইটি। ঐতিহাসিক স্মৃতিস্থাপনা সংরক্ষণের দাবিতে দুটি কর্মসূচি ঘোষণা করে ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ অব বাংলাদেশ (এফএফএসবি)। বিবৃতি প্রদান করেন ১২ জন নির্মাতা। এ সব আন্দোলনের মুখে স্থানীয় সাংসদের হস্তক্ষেপে বাড়ি ভাঙার কাজ বন্ধ রাখা হয়।
এদিকে সংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে রাজশাহী জেলা প্রশাসনকে মুঠোফোনে ঋত্বিক ঘটকের বাড়িটি সংরক্ষণের জন্য বলা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের মৌখিক নির্দেশ পাওয়ার পর জেলা প্রশাসন থেকে রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষকে ফোন করে গ্যারেজ নির্মাণ বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
কাজ বন্ধ রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অধ্যক্ষ আনিসুর রহমান।
রাজশাহীর এই বাড়িতে কেটেছে ঋত্বিকের শৈশব ও কৈশোর। যে শহরে নাট্যচর্চা করেছেন, চিত্র নির্মাণের স্বপ্ন দেখেছেন। দেশবিভাগের মধ্য দিয়ে তাঁকে পাড়ি জমাতে হয়েছে ওপারে। এই বাড়িতে ছিলেন ঋত্বিক কুমার ঘটকের পরিবার, বাবা-মা ও অন্যান্য ভাই বোনেরা। থেকেছেন তাঁর ভাইঝি বরেণ্য কথাসাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী। বহু স্মৃতিবিজড়িত এই বাড়িটির রয়েছে ঐতিহাসিক গুরুত্ব।
এদিকে এই বাড়ির ৩৪ শতাংশ জমি ১৯৮৯ সালে এরশাদ সরকার রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজকে ইজারা দেয় এনিমি সম্পত্তি হিসেবে। কলেজ কর্তৃপক্ষ বাড়ির একটি অংশ পুরোটা ভেঙে ইট, সিমেন্ট ও সুরকি সরিয়ে ফেলেছে ইতোমধ্যে। সম্প্রতি রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ এই বাড়িটি ভেঙ্গে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়।
এতে ফুঁসে উঠে রাজশাহীতে ক্রিয়াশীল ঋত্বিক ঘটক চলচ্চিত্র সংসদ, রাজশাহী চলচ্চিত্র সংসদ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ এই বাড়িটিকে উদ্ধার ও সংরক্ষণের দাবিতে ৩ বছর আগেই সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিলো। কিন্তু কার্যত এ বিষয়ে কোনো প্রতিকার হয় নি।