নিজস্ব প্রতিবেদক:
কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী সঞ্জীব চৌধুরী। সাংবাদিকতা জগতেরও এক উজ্জ্বল নক্ষত্র তিনি। দ্রোহ আর প্রেমের মিলন ঘটিয়ে তিনি সৃষ্টি করেছেন সব কালজয়ী গান। সাংবাদিকতা ও বিপ্লবে তিনি ছিলেন অগ্রগামী। তিনি একাধারে কবি, সাংবাদিক, গীতিকার, সুরকার, গায়ক ও সংগঠক। ১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার মাকালকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
সঞ্জীব চৌধুরীর জন্মদিন আজ। তাঁর জন্মদিনে কালচারাল ইয়ার্ড পরিবারের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা।
হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেন তিনি। এরপর পরিবারসহ ঢাকার চলে আসেন। ঢাকার বকশী বাজার নবকুমার ইন্সটিটিউটে নবম শ্রেণীতে ভর্তি হন। এখান থেকে ১৯৭৮ সালে মেটিক্র পাশ করেন। ১৯৮০ সালে তিনি ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমি পা করেন। এরপর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগে। সব পরীক্ষায় তিনি মেধা তালিকায় ছিলেন শীর্ষে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেন।
সঞ্জীব চৌধুরীর পিতা গোপাল চৌধুরী এবং মাতা প্রভাষিনী চৌধুরী। নয় ভাই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সপ্তম।
বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্র আজকের কাগজ, ভোরের কাগজ ও যায়যায়দিনে সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেন সঞ্জীব চৌধুরী। হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের একজন অগ্রগণ্য কর্মী ছিলেন তিনি। সর্বশেষ যায়যায়দিনের ফিচার এডিটর হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। দেশের দৈনিক পত্রিকায় ফিচার বিভাগের যাত্রা শুরুর ক্ষেত্রে তাঁর অনন্য ভূমিকা রয়েছে।
তিনি সাংবাদিকতার পাশাপাশি ‘শঙ্খচিল’ দলে সঙ্গীতচর্চা করতেন। ১৯৯৬ সালে সংগীতশিল্পী বাপ্পা মজুমদারের সঙ্গে গড়ে তোলেন ব্যান্ড ‘দলছুট’। সঞ্জীব চৌধুরী ও বাপ্পা মজুমদার-এর যৌথ উদ্যোগে করা অ্যালবামগুলোর মধ্যে রয়েছে: আহ্ (১৯৯৭), হৃদয়পুর (২০০০), আকাশচুরি (২০০২), জোছনা বিহার (২০০৭) এবং স্বপ্নবাজী।
সঙ্গীতশিল্পী সঞ্জীব চৌধুরীর আরও খবর
⇒ সঞ্জীবদা’র জন্মদিনে শ্রদ্ধা
⇒ সঞ্জীব চৌধুরী স্মরণে চলছে ‘সঞ্জীব উৎসব’
সঞ্জীব চৌধুরী জনপ্রিয় নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ‘ব্যাচেলর’ চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেছিলেন। গানটি শিরোনাম ‘তোমার ভাঁজ খোল আনন্দ দেখাও’।
সঞ্জীব চৌধুরীর সুর ও গাওয়া জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে আমি তোমাকেই বলে দিব, রিকশা, সাদা ময়লা রঙ্গিলা পালে আউলা বাতাস খেলে, বায়োস্কোপ, আমাকে অন্ধ করে দিয়েছিল চাঁদ, কথা বলব না অন্যতম। সমাজ, দেশ ও রাজনৈতিক সচেতনতার প্রতিফলন ঘটেছে সঞ্জীব চৌধুরীর গানে।
মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে ২০০৭ সালের ১৯ নভেম্বর হঠাৎ করেই মাত্র ৪৩ বছর বয়সেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমান সঞ্জীব চৌধুরী।