বিশেষ প্রতিবেদক :
ঢাকায় বসেছে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বৃহৎ সিনেমার আসর অষ্টাদশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। শনিবার ১১ জানুয়ারি বিকালে রাজধানীর জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে জমকালো আয়োজনে এ উৎসবের পর্দা উঠে। উৎসব উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। পরিবেশন করা হয় ঐতিহ্যবাহী মনিপুরী নৃত্য।
রাজধানীর রাজধানীর অঁলিয়স ফ্রসেস, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগার মিলনায়তন, জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তন, মধুমিতা হল ও স্টার সিনেপ্লেক্সে দেখানো হচ্ছে সিনেমা। এ সিনেমার উৎসবকে ঘিরে এখন জমজমাট এ সব অঙ্গন। রাজধানীবাসী নিজেদের পরিবার-স্বজন ও প্রিয়জনকে নিয়ে আসছেন ছবি দেখতে। ঘুরে দেখছেন ভেন্যুগুলো। ছবি তুলছেন। মুখরিত দেশী বিদেশী চলচ্চিত্রকার, নির্মাতা, অভিনেতা-অভিনেত্রী ও কলা-কুশলীদের আনাগোনায়।
শনিবার বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উৎসবের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে এম আব্দুল মোমেন। উপস্থিত ছিলেন উৎসব পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামালসহ বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার, নির্মাতা ও উৎসব আয়োজকরা।
উদ্বোধনী চলচ্চিত্র হিসেবে জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে দেখানো হয় চলচ্চিত্র ‘উইন্ডো টু দ্য সি’। স্পেন ও গ্রীসের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন মিগুয়েল অ্যাঞ্জেল জিমেনেজ।
‘নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ’- স্লোগানে ৯ দিনব্যাপী অষ্টাদশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে ১৯ জানুয়ারি। উৎসব আয়োজনে বরাবরের মতো রয়েছে রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ।
এবারের উৎসবেও রয়েছে এশিয়ান ফিল্ম প্রতিযোগিতা বিভাগ, রেট্রোস্পেকটিভ বিভাগ, বাংলাদেশ প্যানারোমা, সিনেমা অফ দ্য ওয়ার্ল্ড, চিল্ড্রেন ফিল্মস্, স্পিরিচুয়াল ফিল্মস, শর্ট অ্যান্ড ইন্ডিপেনডেন্ট ফিল্ম এবং উইমেন্স ফিল্ম মেকার বিভাগ। ৭৪টি দেশের ২২০টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত করা হবে উ উৎসবে।
এদিকে ‘বাংলাদেশ প্যানারোমা’ বিভাগে দেখানো হচ্ছে মোট ৮টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। এরমধ্যে উৎসবের শুরুর দিন সন্ধ্যায় দেখানো হয়েছে অরুণ চৌধুরীর আলোচিত ছবি ‘মায়াবতী’। বাকি বাংলাদেশী ছবিগুলোর মধ্যে উৎসবে দেখানো হবে আশরাফ শিশিরের বহুল আলোচিত চলচ্চিত্র ‘আমরা একটি সিনেমা বানাবো’, প্রদীপ ঘোষের ‘শাটল ট্রেন’, এন রাশেদ চৌধুরী পরিচালিত মুক্তি প্রতীক্ষিত ছবি ‘চন্দ্রাবতী কথা’, মাসুদ পথিকের ‘মায়া’, ফরিদ আহমেদের ‘টিউনস অব নস্টালজিয়া’, প্রসুন রহমানের ‘নিগ্রহকাল’ এবং তানিম রহমান অংশুর ‘ন ডরাই’।
সিনেমা দেখার সময়সূচি :
জাতীয় জাদুঘরের মূল মিলনায়তনে সকাল ১০টা থেকে শিশুতোষ চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। শিশুদের সঙ্গে অভিভাবকরাও এ সিনেমা উপভোগ করতে পারবেন। এছাড়া সকাল ১০টা, দুপুর ১টা ও বিকাল ৩টার প্রদর্শনীতে শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে সিনেমা দেখতে পারবেন। সেক্ষেত্রে তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র প্রদর্শন করতে হবে। উৎসবের এ ভেন্যুতে একটি বিশেষ শোতে পথশিশুদের সিনেমা দেখানোর সুবিধা রাখা হয়েছে। সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য টিকেট মূল্য ৫০ টাকা।
কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তনে সকাল ১০টা থেকে শিশুতোষ চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। অভিভাবকরাও শিশুদের সঙ্গে চলচ্চিত্রগুলো বিনামূল্যে দেখতে পাবেন। এছাড়া সকাল ১০টা, দুপুর ১টা ও বিকাল ৩টায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র দেখিয়ে শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে ছবি দেখতে পারবেন। সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য টিকেট মূল্য ৫০ টাকা।
জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তন, অঁলিয়াস ফ্রঁয়েজ মিলনায়তন এবং শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা ও নৃত্যশালায় প্রদর্শনীগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। এ সব ভেন্যুগুলোতে আসন সংখ্যা সীমিত থাকায় আগে আসলে দেখবেন ভিত্তিতে আসন বণ্টন করা হবে।
স্টার সিনেপ্লেক্স ও মধুমিতা সিনেমা হলে কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত প্রদর্শনীর বিনিময়ে দর্শকরা উৎসবের চলচ্চিত্রগুলো উপভোগ করতে পারবেন।