নিজস্ব প্রতিবেদক :
ইনসমনিয়া, আর্থারাইটিস ও এইচআইভি পজেটিভ তিনটি ভালোবাসার গল্প। এ তিন প্যারালাল গল্প মিশেছে এক মোহনায়। হোমোসেক্সুয়ালিটি, পরকীয়া ও অসম প্রেম যে ভালোবাসার গল্প সমাজের চোখে অগ্রহণীয়। এ প্রেমগুলোকে ‘ফাইনালি ভালোবাসা’য় রুপান্তর ঘটিয়েছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা অঞ্জন দত্ত।
তিনি বলছেন সমাজ এই ভালোবাসার সম্পর্কগুলোকে অন্য চোখে তাকায়। সমাজের যে ট্যাবু তিনি এর উল্টো দিক দেখিয়েছেন। কথায় কথায় বললেন এ নিয়ে তার অভিজ্ঞতার কথা। তুলে ধরলেন চলচ্চিত্রকার ঋতুপর্ণ ঘোষ‘র কথাও। এ নিয়ে ঋতুপর্ণের সঙ্গে একসাথে ছবি বানানোর পরিকল্পনাও ছিলো তার। ‘ফাইনালি ভালোবাসা’ তাকে আরেক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে নিয়ে গেছে।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের মুল মিলনায়তনে অষ্টাদশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-এর মঞ্চে দেখানো হয় সিনেমাটি। এটি ২০১৯ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গে মুক্তি পায়। সিনেমাটি প্রযোজনা করেছে শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস। ছবিটির চিত্রনাট্য ছাড়াও এতে অভিনয় করেছেন অঞ্জন দত্ত। এতে আরও অভিনয় করেছেন রাইমা সেন, অর্জুন চক্রবর্তী, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, সৌরসেনী মৈত্রা প্রমূখ।
‘ফাইনালি ভালোবাসা’ সিনেমার প্রদর্শনীতে মিলনায়তন ভর্তি ছিলো দর্শক। ছবি শেষে সরাসরি দর্শকদের সঙ্গে কথা বলেন অঞ্জন। তিনি দর্শকদের প্রশ্নের উত্তরও দেন। এরপর গণগ্রন্থাগার প্রাঙ্গনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি।
অঞ্জন দত্ত বলেন, আমি আমার কথাই ছবিতে বলি। দর্শক কি শুনতে চাইছে তার উপর নয়, আমি একটি গল্প বলি আমার সংকট থেকে। আমার কথাটাই আমি সিনেমায় বলি। দর্শক আমার দেখাটাই দেখে আসলে। খুব শিঘ্রই আরেকটি সিনেমার কাজ শুরু করবেন বলেও জানালেন তিনি।
অঞ্জন জানান, তিনি একটি কমেডি ছবি বানাচ্ছেন। যেটি মূলত হবে রাজনৈতিক স্যাটায়ার। যেখানে গানের মধ্য দিয়ে ঘটনাগুলো এগুবে। এখানে গানে গানে রাজনৈতিক স্যাটায়ার হবে। অনেকটা গুপী গাইন বাঘা গাইনের মতো।
ভারতের এনআরসি নিয়েও কড়া সমালোচনা করে এর বিরুদ্ধে একটি গান প্রকাশের কথাও জানিয়েছেন তিনি। তার রাজনৈতিক স্যাটায়ারমূলক সিনেমায় থাকবে ৭১ ও ৭২ এর প্রেক্ষাপট। যেখানে উঠে আসবে সে সময়ের পুরান ঢাকা। যেখানে এপার থেকে ওপারে গেছে অনেক বাঙালি রিফিউজি। বাঙাল ও পশ্চিম বাংলার যে বিভাজন ও শেষে রিফিউজি অর্থের ভিন্ন আঙ্গিক তুলে ধরা হবে এ সিনেমায়।
বাংলাদেশি ছবিতে অভিনয় ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সিনেমা নির্মাণ
এ সময় বাংলাদেশি সিনেমায় অভিনয়ের কথাও জানালেন অঞ্জন দত্ত। এ নিয়ে বাংলাদেশী নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সঙ্গে মিলে একটি ছবি করার কথাও হয়েছিলো। সব ঠিকঠাক হলেও ছবিটি এখনও এগোয় নি। এখনও তার ইচ্ছে আছে।
এছাড়া বাংলাদেশি সিনেমা পরিচালনার ইচ্ছার কথাও জানান তিনি। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে চিত্রনাট্য করেছি। এটি মুক্তিযুদ্ধের উপর একটি ক্লাসিক ছবি। প্রযোজক খুঁজছি। বাংলাদেশের কেউ প্রযোজনা করলে ছবিটি অবশ্যই বানাবো।