নিজস্ব প্রতিবেদক :
দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বৃহৎ সিনেমার আসর অষ্টাদশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সমাপ্তি ঘটলো। সোমবার (১৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে ১১ জানুয়ারি শুরু হওয়া এই উৎসব শেষ হলো।
নয় দিনব্যাপী এই উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন উৎসবের পরিচালক আহমেদ মোস্তফা জামাল। এতে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করতে চাই। শুধুমাত্র প্রযুক্তিগত উন্নয়ন দিয়ে উন্নত রাষ্ট্র গঠন করা যায় না। এজন্য জাতীয় সংস্কৃতিকে লালন করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। সেক্ষেত্রে চলচ্চিত্রের ভূমিকা অনেক বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের সুদিন ফিরিয়ে আনতে যা যা করণীয়, তা তারা করবো উল্লেখ করে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের সুদিন ফিরিয়ে আনতে যা যা করণীয় তা আমরা করবো। বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদের উত্থানের ফলে চলচ্চিত্র অনেক বড় ধাক্কা খেয়েছে। ’
কালচারাল কমপ্লেক্স নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক উপজেলায় কালচারাল কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। সেখানে ডিজিটাল সিনেপ্লেক্স থাকবে।
‘বেটার ফিল্ম, বেটার অডিয়েন্স এবং বেটার সোসাইটি’-এই স্লোগানে এবারের উৎসবের আয়োজন করে রেইনবো ফিল্ম সোসাইটি। বরাবরের মত এবারও বিভিন্ন বিভাগে বিজয়ীদেরকে পুরস্কৃত করা হয়।
অষ্টাদশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-এর আরও খবর :
⇒ উৎসব মাতালো অঞ্জন দত্তের ‘ফাইনালি ভালোবাসা’
⇒ ‘আহা রে’ নিয়ে ঢাকায় ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত
উৎসবে ৭৪টি দেশের প্রায় ২২০টি চলচ্চিত্র দেখানো হয়। এর মধ্যে পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা ১১৭টি, স্বল্পদৈর্ঘ্য ও স্বাধীন চলচ্চিত্র ১০৩টি। এসব ছবির মধ্যে বাংলাদেশি চলচ্চিত্র রয়েছে ২৬টি। এর মধ্যে স্বল্পদৈর্ঘ্য ও স্বাধীন সিনেমা ১৮টি ও পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা ৮টি।
পুরস্কার পেলেন যারা
এবার বাংলাদেশ প্যানোরোমা সেকশনে সেরা চলচ্চিত্র নির্বাচিত হয়েছে তানিম রহমান অংশু পরিচালিত ‘ন ডরাই’। ইরানের চলচ্চিত্র ‘লোকনাথ’ সেরা শিশুতোষ চলচ্চিত্র বিভাগে বাদল রহমান পুরস্কার জিতেছে।
সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড সেকশনে বেস্ট অডিয়েন্স অ্যাওয়ার্ড জিতেছে ভারতের অঞ্জন দত্ত নির্মিত সিনেমা ‘ফাইনালি ভালোবাসা’।
এশিয়ান কমপিটিশন বিভাগে ইরানি ছবি ‘ক্যাসেল অব ড্রিম’ শ্রেষ্ঠ ফিচার ফিল্মের পুরস্কার পেয়েছে। সেরা চিত্রনাট্যকার হোসেন কারাবে। সিনেমাটোগ্রাফার ভারতের রেডিয়াস চলচ্চিত্রের সপ্নিল সেতে ও অক্ষয় ইন্ডিকর।
একই সেকশনে সেরা অভিনেত্রী হয়েছেন ইরান-আফগানিস্তান-ফ্রান্সের প্রযোজনার চলচ্চিত্র আরিজো ফেরেশতা আফসার, এরিয়াপোর ও হাসিবা ইব্রাহিমী।
ফিলিপিনসের লুইস অ্যাবইউয়েল (অ্যাডওয়ার্ড) সেরা অভিনেতা ও ইরানের মিরকারিমী রেজা (ক্যাস্টেল অব ড্রিমস) সেরা পরিচালকের পুরস্কার পান।
স্পিরিচুয়াল বিভাগে শর্ট ফিকশনে সেরা ‘দ্য ফিস্ট অব দ্য গড’, শর্ট ফিল্মে সেরা ‘দ্যা স্ট্যাম্প’ এবং সেরা প্রামাণ্যচিত্র ‘বিলাভড’।
‘ভিডিও টেপ’, ‘মাই নেম ইজ পেটিয়া’, ‘দ্য হুয়াল অ্যান্ড দ্য রাবেন’ এবং ‘টিনি সোলস’ পুরস্কৃত হয়েছে ওমেন ফিল্ম মেকার সেকশনে।
এছাড়া শ্রীলঙ্কার চলচ্চিত্র ‘চিলড্রেন অব দ্য সান’ পায় স্পেশাল জুড়ি মেনশনে পুরস্কার।