নিজস্ব প্রতিবেদক:
শিশু-কিশোরদের মনন জগতের মানসিক বিকাশ ও নির্মল বিনোদনের ভাবনা নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাতা দেবাশীষ দাস নির্মাণ করছেন শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘মুকুলের যাদুর ঘোড়া’। তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রটির কাহিনি ও চিত্রনাট্য লিখেছেন পরিচালক নিজেই।
নির্মাতা দেবাশীষ দাস ছবিটি সম্পর্কে বলেন, শিশুদের চলচ্চিত্র এখনো আমাদের দেশে উপেক্ষিত। নির্মাতা থেকে শুরু করে সমাজের সবাই মনে করেন, এটা কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ নয়। মানবতা, দায়িত্ববোধ, সহিষ্ণুতা ও ভিন্ন সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাবোধ এই শিক্ষাগুলো ছোটবেলা থেকেই পাওয়া দরকার।
তিনি জানান, নিপুণভাবে গত ছয় মাস ধরে নিরন্তর প্রি–প্রোডাকশন করা হয়েছে। ছবিটির শুটিং গত ২৮ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়েছে ছবিটির শুটিং। এটি চলবে আগামী ৩ মার্চ পর্যন্ত। কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন লোকেশনে শুট করা হচ্ছে। এরপর কুষ্টিয়া শহরের নির্ধারিত শুটিং শেষ করে যথাক্রমে গাজীপুর, বিরিশিরি, পার্বত্য চট্টগ্রাম, নওগাঁ, দিনাজপুর ফুলবাড়ি-তে চলবে সিনেমার বাকি অংশের শুটিং।
চলচ্চিত্রটিতে বাংলাদেশের বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের চলচ্চিত্রিক প্রকাশ নিয়ে ভীষণ আশাবাদী ‘মুকুলের যাদুর ঘোড়া’ নির্মাণ শ্রমিক দল ।-এমনটাই জানিয়েছেন নির্মাতা দেবাশীষ দাস।
এই স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটিতে ‘মুকুল’ নামের মূল চরিত্রে অভিনয় করছেন ‘জলের গান’ এর কর্ণধার রাহুল আনন্দ ও ঊর্মিলা শুক্লা-র একমাত্র সন্তান চন্দ্রবিন্দু তোতা। পাপেট তৈরি এবং ছবি আঁকা, ভেন্ট্রিলোকুইস্ট করা, স্টপ মোশন অ্যানিমেশন করার মতো আর নানান সৃজনশীল কাজে তার সময় কাটে।
চলচ্চিত্রটির অন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করছেন বাংলাদেশের অন্যতম অভিনেতা আহমেদ রুবেল। গত তিন মাস ধরে চলচ্চিত্রটিকে ঘিরে নিজেকে প্রস্তুত করছেন এই গুণী অভিনেতা। এক রহস্যময় চরিত্রে অভিনয় করছেন সাইফুল জার্নাল। সিনেমাটিতে আরও অভিনয় করছেন গাজী মাহতাব হাসান এবং রিফাত চৌধুরী। চলচ্চিত্রটির পোশাক পরিকল্পনায় রয়েছেন ঊর্মিলা শুক্লা।
কাহিনী সংক্ষেপ
ভিড়ের বাজারে মায়ের হাত থেকে হারিয়ে যায় দশ বছর বয়েসি মুকুল এক রহস্যময় মানুষের পিছু পিছু। আর এখান থেকেই শুরু হয় তার জগত-দর্শন। নানান ঘটনা নানান মানুষের সান্নিধ্য পেয়ে মুকুল তার মায়ের কাছে ফিরে তো আসেই কিন্তু এই হারিয়ে যাওয়া মুহূর্তে তার এক আশ্চর্য বোধের উদয় হয়, মুকুল শুধু আর তার মায়ের সন্তান নয় সে পৃথিবীর সন্তানে পরিণত হয়। আর এই যাত্রায় তার সফরসঙ্গী হয় একটি সাদা ঘোড়া।
নির্মাতা দেবাশীষ দাস জানিয়েছেন, শিশু-কিশোরদের স্বাধীন মনোজগতকে দিশা দিতে এই চলচ্চিত্রটির নির্মাণযজ্ঞে যুক্ত হয়েছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ঝাঁক মেধাবী চলচ্চিত্র শিক্ষার্থী ও নবীন নির্মাতা।
শিশুতোষ চলচ্চিত্র শুধুমাত্র শিশুদের অভিনীত চলচ্চিত্র নয়। শিশুদের চারপাশের জগৎ, বোঝাপড়া ও কল্পনার জগৎকে কেন্দ্র করে শিশুদের উপযোগী প্ৰকৃত শিশুতোষ চলচ্চিত্র হয়ে উঠবে ‘মুকুলের যাদুর ঘোড়া’।–এমনটাই বলেন নির্মাতা দেবাশীষ।