কালচারাল ইয়ার্ড ডেস্ক:
আয়-ব্যয়ে অসঙ্গতি ধরা পড়ায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির (বাচসাস) ৪ সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে সংগঠনটি। সংগঠনবিরোধী অবস্থান ও বিশৃঙ্খলার দায়ে সদস্য পদ স্থগিত হয়েছে ৩জনের। তারা হলেন- সংগঠনের সাবেক সভাপতি আবদুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল করিম নিশান ও সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক হামিদ মোহাম্মদ জসিম। এদিকে সাবেক অর্থ সম্পাদক নবীন হোসেনের সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে।
বুধবার (৩ মার্চ) সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবু স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচিত কমিটির কাছে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বুঝিয়ে দেননি অভিযুক্ত কমিটির সদস্যরা। তাদের হিসাবে ৩৮ লাখ টাকার আয় ও ব্যয়ের হিসাবে অসঙ্গতি রয়েছে। এছাড়া অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের সঙ্গে অডিট রিপোর্টের কোনো মিল ছিল না।
জানা গেছে, সংগঠনের রেজুলেশন খাতা বুঝিয়ে না দেওয়া, সংগঠনবিরোধী কার্যক্রম করা এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুনির্দিষ্ট অপরাধে কার্যনির্বাহী পরিষদ এ সব সদস্যদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিগত ১৬ মাস ধরে সংগঠন থেকে মৌখিক ও চিঠির মাধ্যমে নির্বাচিত কমিটি আবদুর রহমান, ইকবাল করিম নিশান, নবীনের কাছে উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো চাইলেও তারা শুধু কালক্ষেপণ করেছেন এবং সংগঠনের ক্ষতিসাধন করেছেন। শাস্তিপ্রাপ্ত সদস্যদের বারবার অনুরোধ করার পরও এবং আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য প্রদানের জন্য চিঠি দিলেও তারা সবকিছু বুঝিয়ে দেননি।
গত ১৬ জানুয়ারি কার্যনির্বাহী পরিষদ একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি একাধিক বৈঠক করে বিভিন্ন কাগজপত্র যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে প্রথমে সাবেক অর্থ সম্পাদক নবীন হোসেনকে তলব করলে তিনি ৩৮ লাখ টাকার মধ্যে মাত্র ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৪০০ টাকার ভাউচার দিতে পেরেছেন। বাকি টাকার খরচের হিসেব দিতে তিনি ব্যর্থ হন বলে জানায় তদন্ত কমিটি।
তদন্ত কমিটির রিপোর্টে বলা হয়, নবীন হোসেনের বক্তব্যের সূত্র ধরেই সাবেক সভাপতি আবদুর রহমান ও ইকবাল করিম নিশানকে অনুরোধপত্র পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রেজুলেশন খাতাসহ কেউই উপস্থিত হননি। পরে তদন্ত কমিটি প্রাপ্ত কাগজপত্র দেখে এবং সাবকে অর্থ সম্পাদক নবীন হোসেনের জবানবন্দীর আলোকে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সালে আবদুর রহমান-ইকবাল করিম নিশানের মেয়াদকালে অর্থনৈতিক বিষয়ে নানাধাপে অনিয়ম ও অপরাধ সংগঠিত হয়েছে। সেখানে অর্থ সম্পাদক নিজেও জড়িত ছিলেন। তিনজন একে অপরের সাথে যোগসাজশে এই অপরাধ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সংগঠনের ক্ষতি করেছেন। এজন্য তিনজনই সমানভাবে দোষী’।
তদন্ত কমিটি জানায় তারা বাচসাস কার্যনির্বাহী পরিষদকে এই তিন সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার সুপারিশ করা হয়েছে। তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এবং সুপারিশকে আমলে নিয়ে কার্যকরী পরিষদ এই তিনজনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে।
কার্যনির্বাহী পরিষদ জানিয়েছে, তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী আবদুর রহমান ও ইকবাল করিম নিশানের প্রাথমিক সদস্যপদ আগামী দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভা পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে সাবেক অর্থ সম্পাদক নবীন হোসেনের প্রাথমিক সদস্যপদ।