সময়কাল একাত্তরের বর্ষা। পাকিস্তানী সেনাদের তাণ্ডব শহর ছাড়িযে পৌঁছে গেছে গ্রামান্তরে। ভারতের সীমান্ত ঘেঁষা এক গ্রামের একটি হিন্দু পরিবার অন্য অনেকের মতো পাড়ি জমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিমল তাঁর স্ত্রী সন্তানদের শেষমহূর্তের গোছগাছের কথা বলে ছোট ভাই কানাইকে নিয়ে হাটে যায়। দিন শেষে আঁধার নেমে আসে। কিন্তু বিমল আর ফেরেনা। পরে জানা যায় পাকিস্তানী সেনারা অন্য অনেকের সঙ্গে বিমলকে ধরে নিয়ে যায়।
এমন একটি টান টান উত্তেজনা নিয়ে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধের একটি বর্বরোচিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে আকা রেজা গালিব নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা ‘ধড়’। যে সিনেমাটি শেষ হয় মুন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া ধড়’র পরিচয় শনাক্ত ও এ সুরাহার মধ্য দিয়ে।
রাজধানীর ফিল্ম আর্কাইভ ভবনে শনিবার (২১ মার্চ) সিনেমাটির একক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। গল্পকার আফসান চৌধুরীর গল্পে নির্মিত ২৫ মিনিটের থ্রিলার সিনেমাটি সরকারি অনুদানে নির্মিত হয়েছে।
বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও লেখক আফসান চৌধুরী তাঁর গল্পে নির্মিত ছবিটি নিয়ে একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, গত দশ পনেরো বছরে এ গল্পটি নিয়ে বেশ কয়েকজন নির্মাতা ছবি বানানোর উৎসাহ দেখিয়েছেন।
তিনি বলেন, বছর তিনেক আগে আকা রেজা গালিব ‘ধড়’ গল্পটি চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য অনুমতি চাইলে সন্দিহান ছিলাম ও ছবিটা শেষ করতে পারবে কিনা। সর্বশেষ ছবিটা ও শেষ করেছে। এটি তাঁর স্ত্রী মেহজাদ গালিব টুম্পার জন্য সম্ভব হয়েছে। গালিব ছবিটি শেষ করতে পেরেছে। তার স্ত্রী টুম্পা তাঁকে এ ছবিটা শেষ করতে প্ররোচিত করেছে। এজন্য আমি তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ।
আফসান চৌধুরী বলেন, আমি যে একাত্তর দেখেছি, সেই সাধারণ মানুষের একাত্তরটাই আমার গল্পে এসেছে। এটি খুব তীব্র এবং অনেকটা অ্যাবসার্ড একটি গল্প।
কালের পুতুল খ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা আকা রেজা গালিব তাঁর নির্মিত ছবিটি নিয়ে বলেন, এই ছবিটির মূল শক্তি এর গল্প। গল্পটাই ছবিটাকে দাঁড় করিয়েছে। ছবিটির গল্পের প্লটের জন্য গল্পকার আফসান চৌধুরীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন গালিব।
ছবিটিতে লুসি তৃপ্তি গোমেজ, আশীষ খন্দকার ও দীপক সুমনসহ আরও অনেকে অভিনয় করেছেন।