কালচারাল ইয়ার্ড ডেস্ক :
দীর্ঘদিন পরে বাণিজ্য ও বিকল্প ধারার চলচ্চিত্র নির্মাতারা এক প্লাটফর্মে বসে এক হয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করলেন। চলচ্চিত্র অনুদান প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিতের কথা বললেন। জাতীয় চলচ্চিত্র অনদুান শুধুমাত্র জাতীয় ঐতিহ্য, আদর্শ, মানবিক মূল্যবোধ, জীবনধর্মী ও শিল্পমানসমৃদ্ধ স্বাধীনধারার চলচ্চিত্রকে প্রদান নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিকল্পধারার নির্মাতারা।
শুক্রবার ২৬ আগস্ট জাতীয় শিল্পকলা একাডেমির সেমিনার হলে জাতীয় চলচ্চিত্র অনুদান প্রক্রিয়ার বিদ্যমান অসঙ্গতি নিরসনের লক্ষ্যে সুপারিশমালা প্রণয়নে মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এ সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ৩৪টি সংগঠনের আয়োজনে আয়োজিত সভায় চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান, শর্ট ফিল্ম ফোরামের সাবেক সভাপতি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা মানজারে হাসিন মুরাদ, নির্মাতা আকরাম খান, এন রাশেদ চৌধুরী, জাহিদুর রহিম অঞ্জন, চলচ্চিত্র গ্রাহক সমিতির সভাপতি আব্দুল লতিফ বাচ্চু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
![শিল্পমানসমৃদ্ধ স্বাধীনধারার চলচ্চিত্রকে অনুদান দিতে হবে](http://i1.wp.com/culturalyard.com/wp-content/uploads/2022/08/Film-grant.jpg)
চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান বলেছেন, চলচ্চিত্র অনুদানে স্বচ্ছতা আনয়ন প্রয়োজন। বাণিজ্যধারা বা বিকল্পধারা বলে বিভাজন কাম্য নয়। ভালো ছবির চিত্রনাট্যকে একটি স্বচ্ছ কমিটির মাধ্যমে অনুদান দিতে হবে।
বিভাজন না করে সকল চলচ্চিত্রকার ও চলচ্চিত্রকর্মীকে এক সঙ্গে মিলে কাজ করতে হবে বলে এ সময় তিনি মত প্রকাশ করেন।
বিকল্প চলচ্চিত্রকার মানজারে হাসিন মুরাদ সংস্কৃতি চর্চায় যে চলচ্চিত্র ভূমিকা রাখবে সে ধরণের চলচ্চিত্রকে অনুদান প্রদানের উপর গুরত্বারোপ করেন। তিনি জানান, একটি অসাম্প্রদায়িক ও সংস্কৃতিমনা সরকারের কাছে দাবি হচ্ছে শুধু শিল্পমনা চলচ্চিত্রকে অনুদান দিতে হবে, যে চলচ্চিত্র বাণিজ্যের জন্য নির্মিত হতে পারেনা। বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের জন্যও অন্যভাবে অনুদানের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে বিদ্যমান অনুদান প্রক্রিয়ায় শুধু শিল্পমান ছবিই থাকবে।
শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করায় বাণিজ্যধারার নির্মাতারা যে ষড়যন্ত্রের কথা বলেছেন এ সময় তিনি এর তীব্র সমালোচনা করেন।
প্রামাণ্য চলচ্চিত্রকে চলচ্চিত্রে অনুদান বাধ্যতামূলক করার কথাও বলেন মানজারে হাসিন মুরাদ।
চলচ্চিত্রের আরও খবর
⇒ অবশেষে জেনিফারের সঙ্গে মাহি-রোশানের দ্বন্দ্বের অবসান
চলচ্চিত্রকার ও আলোচনার সভার সভাপতি মোরশেদুল ইসলাম অনুদানে নির্মিত সিনেমাগুলোর প্রচারে সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান। অন্যান্য আলোচকদের দাবির প্রেক্ষিতে প্রেক্ষাগৃহের পাশাপাশি সরকারি টিভি চ্যানেল ও প্রতিষ্ঠানসমূহে এ সব সিনেমা প্রদর্শন করার দাবি জানান। এ সময় তিনি বলেন, প্রয়োজনে সরকারের উদ্যোগে একটি ওটিটি প্লাটফর্ম করে সরকারের অনুদানকৃত সিনেমা প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
সভায় ৩৪ চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সংগঠনের আয়োজনে আয়োজিত শাহবাগের সমাবেশে তুলে ধরা চলচ্চিত্র অনুদান প্রথায় ১০টি সংশোধনীর প্রস্তাবনা এই সভায়ও তুলে ধরা হয়।
সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- শুধুমাত্র শিল্পমানসমৃদ্ধ স্বাধীনধারার চলচ্চিত্রকে অনুদান দিতে হবে। বাণিজ্য ধারার চলচ্চিত্রের জন্য পৃথক পরিকল্পনা করতে হবে। কাহিনীচিত্রের সমপরিমাণ অর্থ প্রামাণ্যচিত্রে নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রামাণ্যচিত্রে কাজ করা অভিজ্ঞদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।
স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অনুদান সংখ্যা বাড়িয়ে ২০টি করতে হবে। যার দৈর্ঘ্য হবে ১৫-৪০ মিনিট।
এছাড়া চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রক্রিয়ায় নির্মাতাদের পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া, সরকারকে উদ্যোগী হয়ে চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা ও চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিবর্গের সাথে আলোচনা করে অনুদানের চুক্তিপত্রে বিদ্যমান শর্তাবলী সংশোধনের প্রস্তাব করাসহ দশ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়েছে।