কালচারাল ইয়ার্ড ডেস্ক:
ঢালিউডের হিটের তালিকায় স্থান পাওয়া বহু চলচ্চিত্রের সফল চিত্রনায়ক মান্না। বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অঙ্গনে তিন দশক দাপিয়ে অভিনয় করেছেন। প্রায় তিন শতাধিক সিনেমায় তিনি অভিনয় করে চলচ্চিত্রপ্রেমী মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। প্রযোজক ও চিত্রনায়ক মান্না নেই আজ ১৫ বছর। ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মাত্র ৪৪ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।
মান্নার মৃত্যুবার্ষিকীতে পরিবার ও ভক্তরা তাঁকে নানা আয়োজনে স্মরণ করছেন। এদিনে মান্না ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী শেলী মান্না।
বাংলা চলচ্চিত্রের সফল চিত্রনায়ক সৈয়দ আসলাম তালুকদার মান্নার মৃত্যুবার্ষিকীতে কালচারাল ইয়ার্ড পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা।
টাঙ্গাইলে পারিবারিকভাবে পালিত হচ্ছে মান্নার মৃত্যুবার্ষিকী। শুক্রবার মান্নার নিজ জেলা টাঙ্গাইলের প্রেসক্লাবে আয়োজন করা হয়েছে মান্না স্মরণে আলোচনা অনুষ্ঠান। ‘মান্না ফাউন্ডেশন চট্টগ্রাম’-এর উদ্যোগে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে শুক্রবার বিকেল ৪টায় শোক ও স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছে। মান্নার স্মরণে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আজ শুক্রবার বিকেলে ৪টায় ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি মোহাম্মদ এনামুল হক মিঠু।
মান্নার পুরো নাম সৈয়দ মোহাম্মদ আসলাম তালুকদার। ১৯৬৪ সালে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা (এফডিসি) আয়োজিত ‘নতুন মুখের সন্ধানে’র মাধ্যমে তিনি শোবিজ অঙ্গনে পা দিয়েছেন। তিনি প্রথম ‘তওবা’ নামের সিনেমায় অভিনয় করেন।
১৯৯১ সালে মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত কাসেম মালার প্রেম চলচ্চিত্রে তিনি একক নায়ক হিসেবে অভিষিক্ত হন। ছবিটি ব্যাপক ব্যবসায়ী সফলতা লাভ করে। তিনি নব্বই দশক থেকে মৃত্যু অবধি দুই দশক দাপটের সঙ্গে কাজ করেছেন ঢালিউডে।
রোমান্টিক হিরো হিসেবে তিনি সফল হয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি অ্যাকশন হিরো হিসেবে আবির্ভূত হয়েও সফল হয়েছিলেন। রকিবুল আলম রকিব নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নষ্ট জীবন’ তাঁর মুক্তিপ্রাপ্ত সর্বশেষ ছবি।
মান্নার অসংখ্য ব্যবসাসফল সিনেমার মধ্যেে উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে-খল নায়ক, বসিরা, শান্ত কেনো মাস্তান, কুখ্যাত খুনী, কাসেম মালার প্রেম, দাঙ্গা, প্রেম দিওয়ানা, ডিস্কো ড্যান্সার, গুণ্ডা নাম্বার ওয়ান, রংবাজ, বাদশা, রাজা, লাল বাদশা, টপ সম্রাট, রুস্তম, জিদ্দি ড্রাইভার, আমি জেল থেকে বলছি, বাংলার হিরো, আম্মাজানসহ অসংখ্য।
চলচ্চিত্র অভিনয়ের পাশাপাশি মান্না চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছেন। কৃতাঞ্জলি নামে তাঁর চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মান্নার প্রযোজনায় নির্মিত হয় স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ, আমি জেল থেকে বলছি, লুটতরাজ, দুই বধু এক স্বামী, পিতা মাতার আমানতসহ মোট আটটি চলচ্চিত্র। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
কাজী হায়াৎ পরিচালিত আম্মাজান ছবিটি বাংলাদেশের ব্যবসাসফল ও জনপ্রিয় চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম। মান্না ২০০৩ সালে বীর সৈনিক সিনেমায় অভিনয় করে সেরা অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়া তিনি মোট আটবার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন লাভ করেছেন। তিনবার পেয়েছেন মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার। পেয়েছেন বাচসাস পুরস্কারসহ বহু পুরস্কার ও সম্মাননা।
শেলী কাদের (শেলী মান্না) তাঁর স্ত্রী। এই দম্পতির সন্তান সিয়াম ইলতিমাস মান্না।
আরও পড়ুন: এ বছরে মুক্তির অপেক্ষায় যে সব চলচ্চিত্র