বাংলাদেশের বিকল্প চলচ্চিত্র আন্দোলনের ৪০ বছর পূরণ হয়েছে। একই সঙ্গে হলো গুনী চলচ্চিত্রকার মোরশেদুল ইসলামের সিনেমা আগামী’র ৪০ বছর পূর্তি। শুক্রবার ১৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে এ উপলক্ষে বসেছিলো এক মিলনমেলা। চলচ্চিত্রটির সঙ্গে জড়িত শিল্পী-কুশলীরা ও চলচ্চিত্র আন্দোলনের সবস্তরের কর্মী, চলচ্চিত্র বোদ্ধা ও চলচ্চিত্রপ্রেমীদের অংশগ্রহণে হয়েছিলো এক জমকালো আয়োজন।
৪০ বছরে ছবিটির একটি প্রদর্শনী হয়। সঙ্গে মোরশেদুল ইসলামের জীবনকর্মের উপর নুরুল আলম আতিক নির্মিত প্রামাণ্য চলচ্চিত্রের প্রদর্শনীও হয়। ছবি শেষে দর্শকদের আড্ডায় মুখরিত হয়ে উঠে শিল্পকলা একাডেমি অঙ্গন।
চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম তো ছিলেনই অনুষ্ঠানে। আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন ছবিটিতে অভিনয় করা গুনী অভিনেতা পীযুষ বন্দোপাধ্যায়সহ ছবিটির অভিনয়শিল্পীরা। উপস্থিত ছিলেন নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী, নুরুল আলম আতিক, নির্মাতা তানভীর মোকাম্মেল, সিনেমাটির সঙ্গীত পরিচালক শিমূল ইউসুফ, শব্দ প্রকৌশলী রতন পাল, চলচ্চিত্র সংগঠক ও নির্মাতা বেলায়াত হোসেন মামুনসহ অনেকে।
মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সিনেমা আগামী নিয়ে ৪০ বছর পরে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে চলচ্চিত্রকার মোরশেদুল ইসলাম বলেন, আমরা এমনি একটি ছবি বানাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ছবিটি মুক্তির পর নানাক্ষেত্রে শাসকগোষ্ঠীর বাধার মুখে ছবিটি একটি আন্দোলনের হাতিয়ার হয়ে উঠে। ছবিটির কাহিনীও তা-ই। এটি মুক্তিযুদ্ধের পর নিগৃহিত মুক্তিযোদ্ধাদের উপর নিযাতনে ফুঁসে উঠা ভবিষ্যত প্রজন্মের প্রতিবাদের গল্প। দারুন গল্প ও সংলাপের বুননে সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন নির্মাতা। আবহসঙ্গীত উপস্থিত দর্শকদের হৃদয়ে তুলেছে অনুরণন।
পীযুষ বন্দোপাধ্যায়ও ছবিটি সম্পর্কে বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত স্মৃতিচারণ করেন। ছবিটি সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি সে সময়ে এই ছবিটি যে একটি আন্দোলনে রুপ নিয়েছে সেই বিষয়েও কথা বলেন। এই ছবিটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ গড়তে ভূমিকা পালন করে বলেও মত দেন তিনি।
আগামী চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশে জন্মলাভ করে বিকল্প চলচ্চিত্র আন্দোলন। বিকল্প চলচ্চিত্র ও আগামী হাত ধরাধরি করে হেঁটেছে ৪০ বছর। আর তাই চলচ্চিত্রটি শুদ্ধ চলচ্চিত্র আন্দোলনের একটি মাইলফলক। সেই ফলকের উপরই একের পর এক নিজেদের স্মৃতির আচর কেটে গেছেন উপস্থিতজনরা।
বিকল্প ও নান্দনিক চলচ্চিত্রের স্রস্টা মোরশেদুল ইসলামের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছে শিল্পকলা একাডেমির প্রাঙ্গন।